ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যায় রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি কৃষকরা দিশেহারা

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ২৯ আগস্ট ২০১৭

বন্যায় রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি কৃষকরা দিশেহারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট ॥ সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলায় রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষরা দিশেহারা হয়েছে। শাক-সবজির ক্ষেতসহ রোপা আমনের ক্ষেত বন্যায় ৮/১০ দিন পানির নিচে ডুবে থাকায় প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমনের ও সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তম্মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমনের ও সবজি পচে নষ্ট হয়ে গেছে। জেলায় বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায়, বাজারে আমন ধানের চারা দেখা মিলছে না, যদিও কোথায় পাওয়া যাচ্ছে চরা দাম কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। যাদের অর্থ আছে তারা চরা দামে রোপা আমনের চারা কিনে আবারো রোপন করছেন। এক্ষেত্রে শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ কৃষক অর্থের অভাবে এখনও জমিতে চারা রোপন করতে পারেনি। তারা সরকারের সাহায্যের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ব্যাপারে সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক সুজন মিয়া, তৈয়ব আলীসহ আরো অনেকই জানান, ”এ ব্যানায় হামার আর কিছুই থাকিল না বাহে, হামরা কি করে সংসার চালামো, হামরা কিস্তি নিয়া ও গোলার ধান বেচেয়া আমন ধানের চারা গারছিনো। এলাতো সব শ্যাষ হইছে। হামার এলা কি হইবে তোমরাই কন? সরকার কি হামরা গুলাক বেছন (চারা) দিবার নয় ?” এমনি আত্মনার্থ শুধু সদর উপজেলায় নয় সাড়া জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ লাক্ষাধিক কৃষক পরিবারে। তারা ত্রান হিসাবে চাল চায় না, তার রোপা আমনের চারা চায়। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ৮২ হাজার ২৫৯ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৮৪ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে। ধানের চারা রোপণের এক মাসের মাঝে বন্যার পানিতে ডুবেছে ৩১ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমির ক্ষেত। যার মধ্যে ৮ হাজার ৯৫৫ হেক্টর এখনও পানির নিচে নিমজ্জিত রয়েছে। এ ছাড়াও ৭১০ হেক্টর জমির সবজি খেতের মধ্যে গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২৬৫ হেক্টর জমি। তবে কৃষি বিভাগের তথ্যের চেয়ে দ্বিগুণ ক্ষতি হয়েছে বলে জানান ভূক্তভোগীরা। তাদের ধারনা কৃষি বিভাগ তাদের দায় এড়াতে ক্ষতির মনগড়া তথ্য প্রকাশ করেছেন। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক বিধু ভুষন রায় জানান, নয় দিন পানির নিচে থাকায় আমন ক্ষেতের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর তালিকা করে তাদের ক্ষতি পুরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ধান গাছের শিকড় থাকলে কুড়ি গজাবে। তিনি কৃষকদের ধান গাছে লেগে থাকা বন্যার কাদা মাটি ধুয়ে দেয়ার পরামর্শ দেন।
×