ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদযাত্রায় ভোগান্তির শঙ্কা

জোড়াতালি দিয়ে সড়ক সংস্কার

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২৭ আগস্ট ২০১৭

জোড়াতালি দিয়ে সড়ক সংস্কার

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ ঈদযাত্রায় সিরাজগঞ্জের সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যাত্রীর চরম ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈদে সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীদের ছুটি বাতিল করে রাস্তায় খানাখন্দ মেরামত ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের সর্বক্ষণিক মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, আমাদের সড়ক আমরা সচল রাখব, যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখব- এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। ঈদযাত্রায় সড়কে কোন ভোগান্তি হবে না। তারপরও সিরাজগঞ্জে শুধু মহাসড়ক নয়, আঞ্চলিক সড়কেরও বেহাল অবস্থা। প্রতিটি সড়ক খানাখন্দে ভরে গিয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে জোড়াতালি দিয়ে চলছে এসব সড়ক-মহাসড়কের সংস্কার কাজ। এতে ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, জেলার হাটিকুমরুল মোড়, উল্লাপাড়া, চান্দাইকোনা-ঘুড়কা ও হাটিকুমরুল-বনপাড়া সড়কের মহিষলুটি-খালকুলা মহাসড়কের বিটুমিন ও পাথরের সংমিশ্রণ আলাদা হয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। হাটিকুমরুল মোড়ে ২ মাস আগে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কার করার এক সপ্তাহ পর নতুন করে খানাখন্দ দেখা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে এসব মহাসড়ক দিয়ে রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের ২২ জেলার প্রায় ২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে। ঈদের ছুটিতে সড়ক-মহাসড়কে গাড়ির চাপ আরও বেড়ে যায়। জেলার বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সড়কেরও একই অবস্থা। সয়দাবাদ-বেলকুচি-এনায়েতপুর সড়কের উপরিভাগের পাথর ও বিটুমিনের মিশ্রণ উঠে গিয়ে শতাধিক ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা শিয়ালকোল-নলকা,তাড়াশ-রানীহাটি-বারুহাস,তাড়াশ-নিমগাছী-ভুইয়াগাঁতী,উল্লাপাড়া-লাহিড়ীমোহনপুর সড়কের। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বরাদ্দ নেই এমন অজুহাতে কয়েক বছর ধরেই সওজের রাস্তা সংস্কার ও মেরামত কাজে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। জোড়াতালির কাজ সারাবছর চললেও নেই টেকসই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও উদ্যোগ। মহাসড়কের একাধিক বাসচালক জানান রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। খানাখন্দে যেমন গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে তেমনই এক ঘণ্টার রাস্তা যেতে তিন ঘণ্টা সময় লাগছে। তারপর আবার সামনে কোরবানি ঈদ। সড়ক-মহাসড়ক যেভাবে জোড়াতালি দিয়ে কাজ করছে, দুদিন বৃষ্টি হলেই আবার আগের মতোই বেহাল হয়ে যাবে। এদিকে সিরাজগঞ্জ সওজের আওতাধীন বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে সিরাজগঞ্জ শহর এবং শহরের মালশাপাড়া থেকে মুলিবাড়ি রেলক্রসিং পর্যন্ত সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী এবং অদক্ষ শ্রমিক দ্বারা খানাখন্দ পূরণ করা হলেও দায়িত্ব নেই কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর। এনিয়ে ওই কাজের তদারকির দায়িত্বে উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে যাচ্ছেন। সিরাজগঞ্জে (সওজ) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা পাবনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হায়দার জানান, কোরবানি ঈদ সামনে রেখে আমরা দ্রুতগতিতে সংস্কার কাজ করে যাচ্ছি। আবহাওয়া ঠিক থাকলে স্বল্প সময়ের মধ্যেই মেরামতের কাজ শেষ হবে বলে করা আশা করা হচ্ছে। আমতলীর ৯ কিমি খানাখন্দ নিজস্ব সংবাদদাতা আমতলী, বরগুনা থেকে জানান, আমতলী উপজেলার খুড়িয়ার খেয়াঘাট থেকে নোমোরহাট পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার সড়কজুড়ে খানাখন্দে ভরা। ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের মালামাল পরিবহনের একমাত্র সড়কটি এখন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটির দ্রুত সংস্কার করা না হলে পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের উন্নয়ন কাজ থমকে যাবে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খুড়িয়ার খেয়াঘাট থেকে নোমোরহাট পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার সড়ক পথ। গত তিন বছর পূর্বে এ সড়কের কাজ শেষ হয়। ওই সড়ক দিয়ে তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের এ্যাঙ্কর সিমেন্টের ট্যাঙ্কসহ ভারি যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া প্রতিদিন ওই সড়ক দিয়ে শতাধিক গাড়ি চলাচল করে।এ সড়কটি দিয়ে গাড়ি চলাচল করায় সড়কের পাথর ও বিটুমিন উঠে বড় বড় গর্ত হয়েছে। গর্তে পানি জমে খাদায় পরিণত হয়েছে। গত এক বছর ধরে সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। স্থানীয়দের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপজেলা প্রকৌশলীকে জানানোর পরও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের মালামাল পরিবহনের একমাত্র সড়কটি এখন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।শনিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পুরো ৯ কিলোমিটার সড়কজুড়ে খানাখন্দে ভরা। গাড়ি চলাচল করতে পারছে না। সড়কের পাথর ও বিটুমনি উঠে গর্তে পরিণত হয়েছে।
×