ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

হজযাত্রা হোক বিড়ম্বনামুক্ত

প্রকাশিত: ০৪:১০, ১৭ আগস্ট ২০১৭

হজযাত্রা হোক বিড়ম্বনামুক্ত

ইসলামের ৫টি ভিত্তির মধ্যে হজ এমন ১টি ভিত্তি যা আদায় করতে অর্থনৈতিক সামর্থ্যরে সঙ্গে শারীরিক সামর্থ্যও প্রয়োজন পড়ে। হজ আদায়কারীর ফায়দাও অনেক। হাদিসে আছে যে হজ করল সে যেন এইমাত্র জন্ম নিল। অর্থাৎ হাজী সাহেবদের গুনাহ্ মাফ হয়ে যায়। নিষ্পাপ হয়ে যায়। দেখা যায় যে, একবার হজ করার পরে আবারও হজে যাচ্ছে। এমন অনেকেই আছেন যারা প্রতি বছরই হজ আদায় করছেন। যারা হজে যেতে চান তাদের একটা নিয়মের ভিতরে যেতে হয়। বর্তমান সময়ে ইচ্ছা করলেই যে কেউ অর্থ থাকা সত্ত্বেও হজে যেতে পারেন না। আর এই কাজগুলো সমাধা করতে হয় হজ এজেন্সির মাধ্যমে। হজ এজেন্সিরও একটা নিয়ম আছে। ইচ্ছা করলেও তারা কোটার অতিরিক্ত লোক নিতে পারে না। কিন্তু অধিকাংশ এজেন্সি যেটা করে সেটা হলো, কোটা পূরণ হওয়ার পরও যারা আসে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয় হজে পাঠাবার শর্তে। আমরা আমজনতা হজের মাসলা না জানার কারণে আমাদের অনেককে ফাঁদে পড়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। এক বিধবা মহিলা তার ১০ বছর বয়সী পুত্রসহ হজে যাওয়ার মানসে এক এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তিমাফিক টাকাও পরিশোধ করে। হাজী ক্যাম্পে এসে বিমানে ওঠার প্রহর গুনতে থাকে। এক সময় মহিলার যাওয়ার সব প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু ছেলের ভিসা প্রত্যাখ্যান হয়। এখন মহিলা ছোট ছেলেকে রেখে হজে যাবে না। শরীয়তও তাকে এই অনুমতি দেয় না। শরীয়তের হুকুম হলো মাহ্রাম ছাড়া মহিলারা সফর করতে পারবে না। এজেন্সিও এখন এই কথা বলছে। প্রশ্ন হলো, এজেন্সি চুক্তিবদ্ধ করার পূর্বে এই মাসালা বলেছে কি না? আমার অভিজ্ঞতা আমাকে এটা বলে, যেসব জায়গা, যে সব কজে ধর্মপ্রাণ, ধর্মভীরু লোকের আনাগোনা বেশি সেসব জায়গায়, সেসব কাজের ক্ষেত্রে শঠ, লোভী, সুবিধাবাদীর অভাব হয় না। হজ কার্যক্রমের শুরুতেই প্রতিটি মসজিদ থেকে মুসল্লিদের জানাতে হবে কারা কারা চলতি বছরে হজ করতে পারবেন। হজ ইচ্ছুকদের হাজী ক্যাম্পে আসার পূর্ব পর্যন্ত প্রতিটি প্রক্রিয়ার আপডেট জানাতে হবে। যাতে কোন এজেন্সি ভাওতা না দিতে পারে। যারা একবার হজ করেছে তাদের সুযোগ দেওয়ার পূর্বে যারা এখনও হজ করেনি তাদের সুযোগ দেয়া। সম্ভব হলে ভিসা পাওয়ার পর হাজীক্যাম্পে আসা। এতেও অনেকে বিড়ম্বনা হাত থেকে রক্ষা পাবেন। সৎ এজেসির পরিচয় বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা, থানা ও ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে টাঙ্গিয়ে দেয়া। এবং ধর্মমন্ত্রণালয় কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত ছাড়া কারও সঙ্গে লেনদেন না করার জন্য প্রতিটি মসজিদ থেকে মুসল্লিদের জানানো। যেসব এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাদের লাইসেন্স বাতিল করা। প্রয়োজনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কিছু দেখার জন্য দুদকের মতো কমিশন গঠন করা। সবশেষে আসুন সবাই মিলে দোয়া করি আল্লাহ্ যেন আমাদের হজযাত্রাকে সহজ করে দেন। তেজগাঁও, ঢাকা থেকে
×