ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবির ২৮তম উপাচার্য নির্বাচনে তিন সদস্যের প্যানেল

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৩০ জুলাই ২০১৭

ঢাবির ২৮তম উপাচার্য নির্বাচনে তিন সদস্যের প্যানেল

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ মামলা-হামলা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি এবং শিক্ষকদের একাংশের বর্জনের মধ্য দিয়ে অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮তম উপাচার্য নির্বাচনের জন্য তিন সদস্যের একটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। সিনেট অধিবেশনে উপস্থিত সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে মনোনীত এই প্যানেলে রয়েছেন- গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল উদ্দীন, থিওরিটিক্যাল এ্যান্ড কম্পিউটেশনাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল আজিজ। শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশেষ সিনেট অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩-এর আর্টিক্যাল ১১ (১) ধারা অনুযায়ী মহামান্য চ্যান্সেলর কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে ৩ জনের এই প্যানেল মনোনয়ন করা হয়। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের চেয়ারম্যান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩-এর আর্টিক্যাল ২১(২) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এই বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করেন। ১০৫ সিনেট সদস্যের মধ্যে ৪৭ জন সিনেট সদস্য অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সম্মতিক্রমে এই প্যানেল নির্বাচিত হয়। মনোনীত এই তিনজনের নাম যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের কাছে। তার মধ্য থেকে একজনকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেবেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুজন উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, সরকার মনোনীত পাঁচজন সরকারী কর্মকর্তা, স্পীকার মনোনীত পাঁচজন সংসদ সদস্য, আচার্য মনোনীত পাঁচজন শিক্ষাবিদ, সিন্ডিকেট মনোনীত গবেষণা সংস্থার পাঁচজন প্রতিনিধি, অধিভুক্ত কলেজগুলোর পাঁচজন অধ্যক্ষ, ১০ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি ও পাঁচজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকেন সিনেটে। সিন্ডিকেট মনোনীত গবেষণা সংস্থার পাঁচজন প্রতিনিধি, অধিভুক্ত কলেজগুলোর পাঁচজন অধ্যক্ষ ও ১০ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি ও পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি বর্তমান সিনেটে নেই। এদিকে, ২৫ জন নির্বাচিত গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিসহ ৫০ জন প্রতিনিধি না থাকায় গত শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্য প্যানেল মনোনয়নে সিনেট অধিবেশন বর্জন করেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থক শিক্ষকদের সাদা দল। এর আগে নীল দলের বিদ্রোহী একটি অংশ রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট না থাকায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন। পরে হাইকোর্ট ২৯ তারিখের অধিবেশন স্থগিতের আদেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপীল করেন। অবশেষে আপীলের রায়ে বলা হয়, সিনেটে এই বিশেষ অধিবেশন করতে কোন বাধা নেই। শিক্ষকের হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে দিলেন বাম নেতারা ॥ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম সংগঠনের একটি অংশ ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া সিনেট অধিবেশনের বিরোধিতা করে আসছেন। ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নির্ধারণ করে সিনেটে উপাচার্য প্যানেল মনোনয়নের দাবিতে শনিবার সিনেট ভবনের সামনে বিক্ষোভ করতে আসলে নীল দলের শিক্ষকরা তাদের সিনেট ভবনের ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়। এ সময় বাম সংগঠনের নেতারা শিক্ষদের গায়ে হাত তুলেন এবং তাদের সরকারের দালাল আখ্যা দিয়ে নানান অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বাম সংগঠনের নেতাদের আক্রমণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এম আমজাদ আলীসহ অন্তত ১০ জন শিক্ষক আহত হয়। এ সময় বাম সংগঠনেরও কয়েকজন আহত হয়। এদিবে বাম নেতাদের আক্রমণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআইএস বিভাগের প্রভাষক রকিবুল হাসানের ওপর আক্রমণ করলে তার হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জনকণ্ঠকে বলেন, ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুসারেই সিনেটে উপাচার্য প্যানেল মনোনয়নের অধিবেশন ডাকা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের মতো আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, কিছু সদস্য চলে গেলেও সিনেট চলমান থাকে। তিনি বলেন, সিনেটের কোন ক্যাটাগরি অসম্পূর্ণ থাকলেও পুরো সিনেট অকার্যকর হবে, এমন নয়। সিনেট সব সময় কার্যকর থাকবে।
×