ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়াকে ঘন ঘন আদালতে যেতে বাধ্য করা সরকারের নীল নকশা: রিজভী

প্রকাশিত: ০১:৩১, ২৩ জুন ২০১৭

খালেদা জিয়াকে ঘন ঘন আদালতে যেতে বাধ্য করা সরকারের নীল নকশা: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ঘন ঘন আদালতে যেতে বাধ্য করা সরকারের নীল নকশা বলে অভিযোগ করেছে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এই আচরণ অমানবিক, ন্যায়নীতি পরিপন্থী ও একদলীয় দুঃশাসনের বর্ধিত প্রকাশ। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন সামনে ঈদ অথচ সাধারণ মানুষের মনে আগের মতো ঈদের সেই আনন্দ নেই। কারন মোটা চাল কিনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। তার ওপর নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য ঈদের নতুন পোশাক কিনতে বাবা মায়ের নাভিশ্বাস ওঠছে। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, যারা ক্ষমতায় আছেন তারা তো হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছেন তাদের তো কোন অসুবিধা নেই। তারা দেশে ঈদের মার্কেট করছেন না, শোনা যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও কলকাতার মার্কেটে তাদের ভিড়। তাই তারা দেশের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনের ব্যাপারে কোন চিন্তা করে না। রিজভী বলেন, দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থা এখন এমন অবস্থায় উপনীত হয়েছে যে, ভারতের ওপর নির্ভরশীলতাই যেন দেশের মানুষের ভাগ্যে নির্ধারিত হয়েছে। গণমাধ্যমের সংবাদ অনুযায়ী এবার দুই লাখ লোক কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করেছে। তাই দেশের ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। দেশের ব্যবসা প্রতষ্ঠান ও বিপণী বিতানগুলোতে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। সারাদেশের মানুষের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও হতাশার ছাপ বিদ্যমান। রুহুল কবির রিজভী বলেন, বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা দিতে গেলে সেখানে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্য থেকে হাজারীবাগ থানা যুবদল সভাপতি আবুল খায়ের লিটন, যুবদল নেতা হৃদয়, বিএনপি নেতা মোখলেছুর রহমান, সোলেমান আলী ও লুৎফর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আমি এই গ্রেফতারের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। রিজভী বলেন, ঈদের মাত্র ক’দিন বাকি থাকলেও বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। তার আগের সপ্তাহগুলোতেও বিএনপি চেয়ারপার্সনকে একইভাবে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। ঈদের দু‘দিন পর অর্থাৎ ২৯ জুন তাকে আবারও হাজিরা দিতে হবে। এটি বিএনপি চেয়ারপার্সনের ওপর সরকারের পরিকল্পিত নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ। কোনো রকম বিরাম বা বিরতি না দিয়ে ক্রমাগত প্রতি সপ্তাহে আদালতে উপস্থিত করানো বিএনপি চেয়ারপার্সনকে হয়রানি করার উদ্ধত আচরণ। রিজভী বলেন, বিএনপির মতো বিরোধী দলগুলোকে বিপর্যস্ত করাই বর্তমান সরকারের একমাত্র টার্গেট। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়ি বহরে হামলা করা হয়েছে। যদি বিএনপি মহাসচিব রাস্তা পরিবর্তন না করতেন তাহলে তার প্রাণনাশেরও আশংকা ছিল। আর এ ঘটনায় যখন সমালোচনার ঝড় বইছে, তখন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ তার দলীয় ক্যাডারকে সিএনজি ড্রাইভার বানিয়ে বিএনপি নেতাদের নামে বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক মামলা দায়ের করেছেন। আমরা অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ ।
×