ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চালের লাভের টাকা যাচ্ছে মিলারদের পকেটে

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ১৮ জুন ২০১৭

চালের লাভের টাকা যাচ্ছে মিলারদের পকেটে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সম্প্রতি সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা মোটা চালের দামও অনেক। আবার প্রতি মৌসুমে প্রচুর ধান উৎপাদন হলেও, খোলে না কৃষকের কপাল। এখন প্রশ্ন, ধান থেকে উৎপাদিত চালের এই আগুন দামের মাঝখানে, মুনাফা যায় কোথায়? নওগাঁর রানীনগর উপজেলার কৃষক আব্দুস সালাম। ধান বিক্রি করতে এসেছেন উপজেলার আবাদপুকুর হাটে। মিনিকেট জাতের ২৬ মণ ধান বিক্রি করেছেন ১১০০ টাকা দরে। বলছেন, উৎপাদন খরচ আর বাজার পর্যন্ত আসতে তার মণ প্রতি খরচ পড়েছে প্রায় সাড়ে নয়শ টাকা। অর্থাৎ এক মণ ধানে তিনি লাভ পেয়েছেন মাত্র দেড়শ টাকা। কৃষক সালামের মতে, বৈরি আবহাওয়ার কারণে এবার একদিকে যেমন ফলন বিপর্যয় হয়েছে, তেমনি শ্রমিকদের মজুরিও দিতে হয়েছে অনেক বেশি। শুধু আব্দুস সালামই নন, একই সুরে কথা বললেন এই বাজারে ধান বিক্রি করতে আসা অন্য কৃষকরাও। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনেন স্থানীয় আড়তদাররা। যারা এগুলো প্রকারভেদে প্রতি মণে ৭ থেকে ১০ টাকা লাভে বিক্রি করছেন মিলারদের কাছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, আড়তদারদের কাছ থেকে প্রতি মণ মিনিকেট জাতের ধান কিনে মিলে আনা পর্যন্ত মিলারদের খরচ পড়ছে ১১২০ টাকা পর্যন্ত। এর সঙ্গে চাল উৎপাদন খরচ যুক্ত হয় গড়ে ৩৫ টাকা। সে হিসেবে প্রতি মণ ধান থেকে উৎপাদিত ২৫ কেজি চালের মোট খরচ দাঁড়ায় ১১৫৫ টাকা। সে হিসেবে এক কেজি মিনিকেট চালের উৎপাদন খরচ ৪৬ টাকা। কিন্তু মিলাররা সেই চাল বিক্রি করছেন ৫২ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে মিলারের পকেটে যাচ্ছে ৬ টাকা, প্রতি মণে ২৪০ টাকা। যদিও এ নিয়ে দ্বিমুখী বক্তব্য আছে মিলারদের। এখানেই শেষ নয়। অনুসন্ধান বলছে, কিছু মিলে বড় মজুদ আছে চিকন জাতের ধান। যদিও সরকারের স্পষ্ট অবস্থান অবৈধ মজুদ আর দাম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। কিন্ত প্রশাসন কী বলছে? সচেতন মহল মনে করেন, সরকারি নজরদারি বাড়ানো গেলে একদিকে কৃষক যেমন ধানের ন্যায্যমূল্য পাবে, তেমনি সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা পাবে দেশের চালের বাজার।
×