ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যেসব প্রাইভেট ভার্সিটি শর্ত পূরণে ব্যর্থ, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৬ মে ২০১৭

যেসব প্রাইভেট ভার্সিটি শর্ত পূরণে ব্যর্থ, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শর্ত পূরণে ব্যর্থ ও একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনা করা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মন্ত্রী বলেছেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব ক্যাম্পাসে যেতেই হবে। বিধিবিধান মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে হবে। যারা শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং একাধিক ক্যাম্পাসে শিক্ষা পরিচালনা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন- ভারতের লক্ষেèৗ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. মোজাম্মেল। সমাবর্তনে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম খান বক্তৃতা করেন। রাষ্ট্রপ্রতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মোঃ আব্দুল হামিদের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেনÑ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মন্ত্রী দেশের বাস্তবতা এবং জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিসহ সকল প্রকার ব্যয় একটি সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত রাখতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহ্বান জানান। বলেন, উচ্চশিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বহুমাত্রিক শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার যথোপযুক্ত পরিকল্পনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর থাকতে হবে। বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত ও তথ্য বিপ্লবের সুযোগ গ্রহণ করে তাদের যুগোপযোগী মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। দেশের উন্নয়নে মেধার সঙ্গে সৃজনশীলতার সমন্বয় ঘটাতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারী বা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকারী ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না। তারা সকলেই আমাদের সন্তান এবং জাতির ভবিষ্যত। তাদের সকলের জন্যই আমরা মানসম্মত শিক্ষা এবং সকল সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই। কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এখনও তাদের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এভাবে তারা বেশি দিন চলতে পারবেন না। যে সকল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সফল হতে পারেনি, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার পরিবেশ ও নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যারা মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে চলতে চান, যারা নিজস্ব ক্যাম্পাসে এখনও যাননি, যারা একাধিক ক্যাম্পাসে পাঠদান পরিচালনা করছেন তারা আইন অনুসারে সঠিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে না পারলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধসহ তাদের বিরুদ্ধে অন্য আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এ কথাও আমরা বিবেচনা করেছি, আমরা আমাদের দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ব্যর্থ হতে দিতে চাই না। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের লক্ষ্য সুদূরপ্রসারী এবং দৃঢ়। ২০২১ সালের মধ্যে অর্থাৎ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে চাই। ২০৪১ সালে আমরা উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব সমাজে স্থান পেতে চাই। দারিদ্র্য দূরীকরণ এখনও আমাদের একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দারিদ্র্য দূরীকরণে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, দেশ যখন উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনি একদল স্বাধীনতাবিরোধী উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ব্যাহত করার জন্য ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাস ও জঙ্গী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে তাদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তাদের কুমন্ত্রণায় প্ররোচিত হয়ে বেশকিছু তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে বিপথগামী হয়েছে। মেধাবী ও সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীরা যাতে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যাদানকারী জঙ্গীদের কবলে পড়ে জীবন ধ্বংস না করে সেদিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান। সমাবর্তনে ১৭ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী দেয়া হয়। ১০ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর এ্যাওয়ার্ড এবং ১৮ জনকে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ চেয়ারম্যান এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী কৃতী শিক্ষার্থীদের মাঝে পদক ও সার্টিফিকেট বিতরণ করেন।
×