ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সায়মা আফরোজের কণ্ঠে অনিবার্য সুন্দরের দীপ্তিমান পদাবলী

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

সায়মা আফরোজের কণ্ঠে অনিবার্য সুন্দরের দীপ্তিমান পদাবলী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতা প্রেমীদের জন্য সন্ধ্যাটি ছিল প্রাণোচ্ছল। পুরো মিলনায়তনজুড়ে ধ্বনিত হচ্ছিল একের পর এক হৃদয়কাড়া কবিতার উচ্চারণ। কোনটিতে প্রকাশিত প্রেম-বিরহের আসফালন আবার কোনটিতে উচ্চারিত প্রতিবাদী এক বজ্র কণ্ঠ। এমনই এক কবিতা সন্ধ্যা ও আবৃত্তিশিল্পী সায়মা আফরোজের কণ্ঠে ‘অনিবার্য সুন্দরের দীপ্তিমান পদাবলী’ শিরোনামের আবৃত্তির এ্যালবাম প্রকাশ করা হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে শনিবার। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যৌথভাবে আবৃত্তিমেলা ও স্বরচিত্র। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্যসচিব মুর্তজা আহমদ, ও ভারপ্রাপ্ত সংস্কৃতি সচিব মোঃ ইব্রাহিম হোসেন খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবৃত্তিশিল্পী মাহিদুল ইসলাম। শুরুতে সদ্য প্রয়াত সঙ্গীতজ্ঞ লাকী আখন্দ’র স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন আবৃত্তি মেলার সদস্য ড. সিরাজুর রহমান। পরে অতিথিরা আবৃত্তিশিল্পী সায়মা আফরোজের কণ্ঠে ‘অনিবার্য সুন্দরের দীপ্তিমান পদাবলী’ শিরোনামের আবৃত্তির এ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন। বক্তারা বলেন. সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে মানুষের মুখনিঃসৃত উচ্চারণ হতে কবিতার সৃষ্টি। এরপর ধীরে ধীরে এর সৌন্দর্য বাড়তে থাকে। শিল্পের অন্যান্য মাধ্যমের মতো কবিতাও মানুষকে দিতে পারে অনাবিল আনন্দ। আমাদের দেশে এখন কবিতা পাঠের এক বিশেষ জোয়ার বইছে। অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোগে কবিতাকে মানুষের খুব কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানে শিল্পী সায়মা আফরোজের কবিতা আবৃত্তির প্রসংসা করে অতিথিরা বলেন, সায়মা যে সুললিত কণ্ঠ দিয়ে মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করছে, আমরা আশা করছি তিনি ভবিষ্যতে আরও ভাল ভাল কবিতার এ্যালবাম আমাদের উপহার দিতে পারবে। শিল্পী সায়মা আফরোজ তার এ্যালবাম সম্পর্কে অনুভূতি প্রকাশে বলেন, আজ আমার একটি স্বপ্ন পূরণ হলো। যে সব শ্রদ্ধার মানুষ আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াসটিতে অংশ নিলেন আমি তাদের কখনও ভুলতে পারব না। এরপর তিনি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘একটি সংলাপ’ ও রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর ‘আমি সেই অভিমান‘ কবিতা আবৃত্তি করেন। সবশেষে কবিতা আবৃত্তি করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এইচটি ইমাম, মাহিদুল ইসলাম ও সায়মা আফরোজ। জাদুঘরে গান-কবিতার যুগলবন্দী পরিবেশনা বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় রবি ঠাকুরের গানের সুরে কেটেছে শ্রোতার আনন্দময় কিছুটা সময়। গানের সঙ্গে ছিল কবিতার আবৃত্তি। গান শুনিয়েছেন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী শামা রহমান আর কবিতা পড়েছেন সামিউল ইসলাম পোলাক। শনিবার গান ও কবিতার এই যুগলবন্দী পরিবেশনাটি অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে। গান-কবিতায় সাজানো অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি)। মায়াবী কণ্ঠের আশ্রয়ে সুরের বৈভবে শ্রোতার অন্তরে প্রশান্তি ছড়িয়ে দেন শামা রহমান। শুরুতেই গেয়ে শোনান ‘ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা/প্রভু, তোমার পানে, তোমার পানে, পানে’। দ্বিতীয় গানে শিল্পী বলে যান অপার আনন্দের কথা। গেয়ে শোনান ‘বহে নিরন্তর অনন্ত আনন্দধারা’। তৃতীয় গানে কণ্ঠে তুলে নেন ভালোবাসায় সৃষ্ট রাগ-অনুরাগের ভাষাটি। গেয়ে শোনান ‘গভীর বিরহ মধুর হলো আজি মধুরাতে/গভীর রাগিনী উঠে বাজি বেদনাতে। এরপর শিল্পী একে একে গেয়ে শোনান ‘বিপুল তরঙ্গরে’, ‘ছায়া ঘনাইছে বনে বনে’, ‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে’সহ বেশ কিছু গান। আবদুল হাই মাশরেকীর জন্মদিনে আয়োজন আবদুল হাই মাশরেকী ছিলেন সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের হাসি কান্না, সুখ-দুঃখ, বিরহ-বেদনা, আনন্দ-মিলন, আশা-আকাক্সক্ষার রূপকার। তিনি ছিলেন খেটে খাওয়া মানুষের জীবনবোধের আদর্শ কবি। গ্রামের মাটির সোঁদা ঘ্রাণ আর শ্রমজীবী মানুষের গায়ের ঘাম তার কাব্যে পাওয়া যায়। তার প্রতিটি লেখনী বাংলা সাহিত্যেও শিকড়। গতকাল শনিবার লোককবি আবদুল হাই মাশরেকীর ৯৮তম জন্মদিনে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে দুই দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসবে এসে তাকে এভাবে স্মরণ করলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। উৎসবের আয়োজন করেছে লোককবি আবদুল হাই মাশরেকী গবেষণা কেন্দ্র। শনিবার বিকেলে একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যশালা মিলনায়তনে উদ্বোধনী আসরে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। ড. আফসারুজ্জামান সভাপতিত্ব করেন। শিল্পকলা একাডেমির কর্মচারী ইউনিয়নের নাট্যোৎসব শিল্পকলা একাডেমি কর্মচারী ইউনিয়নের ৩৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে কাল সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী নাট্যোৎসব। ‘শিল্প-সংস্কৃতি-সৃজনশীলতা, জয় জয় জয় মানবতা’ শিরোনামে উৎসবটি উৎসর্গ করা হচ্ছে সদ্যপ্রয়াত সুরস্রষ্টা লাকী আখন্দকে। শনিবার শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি এস এম সালাউদ্দিন জানান, ২৪ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৫টায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে নাট্যোৎসব উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় ১০টি নাট্যদলের ১০টি প্রযোজনা মঞ্চস্থ হবে এ উৎসবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি এস এম সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল আকতারুজ্জামান এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরী। উৎসবের মূল হলে ২৪ এপ্রিল মঞ্চস্থ হবে থিয়েটারের নাটক ‘মেরাজ ফকিরের মা’, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হবে মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়ের ‘শিখ-ী কথা’। ঢাবির জগন্নাথ হলে মলয়া সঙ্গীতানুষ্ঠান ॥ মালয় সঙ্গীতের প্রসারে ঢাকা বিশ্বদ্যিালয় জগন্নাথ হল কর্তৃপক্ষ আজ রবিবার সন্ধ্যায় হলের উপাসনালয়ে মলয়া সঙ্গীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন দেব প্রসাদ ভট্টাচার্য, চন্দন আচার্য, রফিক সরকার, লিনা তাপসী, বিমান চন্দ্র। মলয়া গানের আসর উপলক্ষে শনিবার জগন্নাথ হলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সঙ্গীতসাধক মনমোহন দত্ত দত্তের সাধনতীর্থ আনন্দ আশ্রম। এতে বক্তারা বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিপরীতে সঙ্গীতসাধক মনমোহন দত্তের সর্বধর্ম সমন্বয়বাদী চিন্তা ও দর্শন মানবিক ভালবাসায় পূর্ণ বিশ্ব রচনা করতে পারে। সমকালীন সঙ্কটময় পৃথিবীতে মনোমোহনের সমন্বয়বাদী ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন খুব জরুরী। অসহিষ্ণুতা, অস্থিরতা ও জঙ্গীবাদের বিপরীতে বৃহত্তর সমাজ গঠনে মলয়া সঙ্গীত ভূমিকা রাখবে। সংবাদ সম্মেলনের উপস্থিত ছিলেন ঢাবি জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার, মনোমোহনের প্রপৌত্রী কল্যাণী দত্ত, নাত বউ শঙ্করী দত্ত, প্রপৌত্র ডাঃ স্বরূপ রতন দত্ত, আশ্রম কমিটি সাধারণ সম্পাদক জয়দেব বর্মণ প্রমুখ। লিখিত বক্তব্যে কল্যাণী দত্ত বলেন, উপমহাদেশের প্রখ্যাত লোকসাধক মনোমোহন দত্ত ও তাঁর রচিত মলয়া সঙ্গীতে প্রতিফলিত ধর্ম দর্শন ও জীবন দর্শন বিশ্বব্যাপী মানবিক চেতনা বিকাশের ক্ষেত্রে যুগান্তরকারী প্রভাবক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তার জীবন ও কর্মে যে ভাবাদর্শ প্রতিফলিত হয়েছে তা বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গিতে মানবতাবাদী অভিব্যক্তিরই দৃষ্টান্ত।
×