ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

একনেক বৈঠক

স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা পুষ্টি খাতে ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২২ মার্চ ২০১৭

স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা   পুষ্টি খাতে ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকার নতুন কর্মসূচী নিচ্ছে সরকার। স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা এবং পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচীর (এইচপিএনএসডিপি) চতুর্থ পর্যায়ের আওতায় এ বিপুল অর্থ ব্যয় করা হবে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। এইচপিএনএসডিপি কর্মসূচীর তৃতীয় পর্যায়ের মেয়াদ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। তৃতীয় পর্যায় বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫৭ হাজার কোটি টাকা। এ হিসেবে চতুর্থ পর্যায়ে টাকার অঙ্কে কর্মসূচীর আকার দুই গুণেরও বেশি বাড়ানো হচ্ছে। সদ্য শেষ হওয়া এ কর্মসূচীর সুবাদে স্বাস্থ্যখাতের কয়েকটি সূচকে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) অর্জন করা গেছে। তবে নারী ও শিশুর অপুষ্টি, খর্বাকৃতি, ওজনহীনতার মতো সূচকগুলোতে কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তাই এসব লক্ষ্য পূরণের পাশাপাশি এসডিজি অর্জন ও আগামীতে স্বাস্থ্যখাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এত বড় আকারের কর্মসূচী নেয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত এইচপিএনএসডিপি কর্মসূচীর চতুর্থ পর্যায় বাস্তবায়ন করা হবে। একনেক সভায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মোট নয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারী তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে প্রায় এক লাখ ৪ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ১৮ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা। সভায় ‘সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ৩২৩টি সরকারী মাধ্যমিক স্কুলের একাডেমিক ভবন নির্মাণসহ ভূমি উন্নয়ন এবং ১২৫টি স্কুলের বিদ্যমান একাডেমিক ভবনের উর্ধমুখী সম্প্রসারণ, সায়েন্সল্যাব, লাইব্রেরি, হোস্টেল, কোয়ার্টার নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক উন্নয়ন করা হবে। তিনি বলেন, স্কুল উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক শ্রেণী থেকে আরেক শ্রেণীতে অবাধে যাতায়াতের জন্য টানা বারান্দা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া যেসব স্কুলে লিফট লাগানোর কথা বলা হয়েছিল, সেগুলোতে লিফটের পরিবর্তে এস্কেলেটর (চলন্ত সিঁড়ি) দিতে বলেছেন। মন্ত্রী জানান, দক্ষ শিক্ষকদের মাঠ পর্যায়ে রাখতে তাদের পরিবারের কাছাকাছি রাখার ব্যবস্থা করতেও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। মুস্তাফা কামাল বলেন, বর্তমান বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান ছাড়া এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এজন্য দেশে বিজ্ঞান শিক্ষার বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। তাই প্রাথমিকভাবে দেশের সরকারী কলেজসমূহে বিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। অনুমোদিত অন্য ৬ প্রকল্প ॥ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। গৌরনদী টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। বিসিএসআইআর’র আইএমএমএম-এ একটি খনিজ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা। যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ক (এন-৭০৬) যথাযথ মানে ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। বগাছড়ি-নানিয়ারচর-লংগদু সড়কে দশম কিলোমিটার চেংগী নদীর ওপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। ঢাকা শহরে ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
×