ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গোপালপুর হাদিরা ইউপিতে কার্ডপ্রতি তিন হাজার টাকা

ভিজিডি কর্মসূচীতে দুর্নীতি

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ৯ মার্চ ২০১৭

ভিজিডি কর্মসূচীতে দুর্নীতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ৮ মার্চ ॥ দুস্থ’ ও অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার সরকারী উদ্যোগ ভিজিডি কর্মসূচী নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে হাদিরা ইউনিয়নের নাম তালিকা জব্দ করেছেন ইউএনও মাসূমুর রহমান। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি এ ব্যবস্থা নেন। এদিকে এই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়টি ধরা পড়লে ইউপি চেয়ারম্যান সচিবকে দায়ী করছেন। অপরদিকে ইউপি সচিব চেয়ারম্যানকে দায়ী করছেন। জানা যায়, গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের আড়াই শতাধিক দুস্থ মানুষকে সরকারী খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য গত জানুয়ারিতে ইউনিয়ন পরিষদ একটি তালিকা তৈরি করে। এ থেকে দুস্থরা মাসে ৩০ কেজি চাল পাওয়ার কথা। তালিকা তৈরির আগে ভিজিডি কার্ড পিছু তিন থেকে চার হাজার টাকা করে উৎকোচ আদায় করা হয়। মায়মুনা বেগম (৫৫) নামে এক ভিখিরিীর কাছ থেকে এক ইউপি মেম্বার দুই হাজার টাকা উৎকোচ নেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের ইন্ধনে উৎকোচের রেট তিন হাজার ওঠায় বাড়তি আরও এক হাজার টাকা দাবি করা হয়। ওই ভিখিরি তা দিতে অসমর্থ হলে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের হস্তক্ষেপে মায়মুনার নাম কেটে দিয়ে ফেরদৌসি বেগমের নাম তালিকাভুক্ত করে। এভাবে প্রকৃত দুস্থদের বাদ দিয়ে অবস্থাপন্ন এবং আত্মীয়স্বজনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। এর পর ওই ভিখিরি স্থানীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে এর প্রতিকার দাবি করেন। ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, সচিব জাকির হোসেন এবং ইউপি মেম্বারদের ৬জনের একটি সিন্ডিকেট এ কাজে জড়িত বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এ তালিকা ধরেই গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দুস্থদের মধ্যে প্রথমবারের মতো চাল বিতরণ শুরু করা হয়। এতে বঞ্চিতদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ওই ইউনিয়নে দায়িত্ব পালনকারী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আমিনা বেগমের নিকট সুবিচার না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসূমুর রহমানের নিকট অভিযোগ দেয়া হয়। পরে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম এবং পরিষদের সকল মেম্বারকে কার্যালয়ে ডেকে আনেন। তিনি অনিয়ম দেখতে পেয়ে ভিজিডির নাম তালিকা জব্দ করেন। এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসূমুর রহমান জানান, উপজেলা ভিজিডি কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে তিনি যে চূড়ান্ত তালিকায় স্বাক্ষর করেছেন সেটিকে ফ্লুইড দিয়ে মুছে বা ঘষামাজা করে অনেক দুস্থ মানুষের নাম বাদ দিয়ে নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত এবং তালিকা পুনরায় যাছাইবাছাই করা হচ্ছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আমিনা বেগমকে শোকজ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, কারো নিকট থেকে টাকাপয়সা নেয়া হয়নি। তবে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তার জন্য দায়ী ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জাকির হোসেন। অপরদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব জাকির হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। অনিয়ম হলে তার জন্য চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সাহেবই দায়ী।
×