ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নাঈম ও ফরহাদের শতকে দক্ষিণাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল ম্যাচ ড্র

বিসিএল ॥ জয়ের ধারায় ফিরেছে মধ্যাঞ্চল

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিসিএল ॥ জয়ের ধারায় ফিরেছে মধ্যাঞ্চল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা তিন রাউন্ড ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলকে যেন খুঁজেই পাওয়া যায়নি। চতুর্থ রাউন্ডে এসেই জ্বলে উঠেছে দলটি। এমনই ঝলক দেখিয়েছে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলকে ২২৭ রানের বিশাল ব্যবধানেই হারিয়ে দিয়েছে। বিসিএলের চতুর্থ রাউন্ডে প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চলের বিপক্ষে বিসিবি উত্তরাঞ্চলের ভরাডুবির যে শঙ্কা করা হয়েছিল নাঈম ইসলাম ও ফরহাদ হোসেন শতক করে সেই শঙ্কা দূর করে দিয়েছেন। ফলোঅনে পড়েও উত্তরাঞ্চল ম্যাচ বাঁচিয়েছে। ড্র করেছে। মধ্যাঞ্চলের জয়ে ও দক্ষিণাঞ্চল-উত্তরাঞ্চলের ম্যাচ ড্র হওয়াতে এখন শিরোপা রেসে সব দলই টিকে আছে। ৪ ম্যাচে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের পয়েন্ট যেখানে ১২, সেখানে মধ্যাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের পয়েন্ট তিন কম ৯ পয়েন্ট। ফতুল্লায় চতুর্থ রাউন্ডে প্রথম ইনিংসেই ৩২৮ রান করে ফেলে মধ্যাঞ্চল। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে তৃতীয়দিন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ৫ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রান করেছিল। ৩৮৩ রানে এগিয়ে গিয়েছিল। চতুর্থদিন আর ১৬ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে মধ্যাঞ্চল। তাতে প্রথম ইনিংসে ২১১ রানেই অলআউট হয়ে যাওয়া পূর্বাঞ্চলের সামনে জিততে ৪০০ রানের টার্গেট দাঁড় হয়। এই রান অতিক্রম করতে গিয়ে ১৭২ রানেই গুটিয়ে যায় পূর্বাঞ্চল। শুভাগত হোমের (৪/৪৬) দুর্দান্ত বোলিংয়ে হারই হয় নিয়তি পূর্বাঞ্চলের। এবার লীগে প্রথম জয় পেল মধ্যাঞ্চল। ম্যাচটিতে হারলে বা ড্র করলে শিরোপা রেস থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনায় ছিল দলটির। জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে। তাতে হাতে থাকা দুই রাউন্ডে ভাল কিছু করতে পারলে শিরোপাও ঘরে তুলতে পারে দলটি। বিকেএসপি-৪ নম্বর মাঠে দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের ম্যাচটিতে নাটকীয় মোড়ই নিয়েছে। তৃতীয়দিন শেষে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ১০৫ রানে পিছিয়ে ছিল উত্তরাঞ্চল। দক্ষিণাঞ্চল যেখানে প্রথম ইনিংস খেলেছে। তুষার ইমরানের ২২০ রানে ৫০১ রান করেছে। সেখানে উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংসে ২৪২ রানে অলআউট হয়ে ফলোঅনে পড়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে তৃতীয় দিনে ২ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান করে উত্তরাঞ্চল। তখন মনে হয়েছিল চতুর্থ ও শেষদিনে অলআউট হয়ে যাবে উত্তরাঞ্চল। ম্যাচটি হারবে। কিন্তু তৃতীয়দিন শেষে ৬২ অপরাজিত থাকা ফরহাদ হোসেন ও ২৪ রানে অপরাজিত থাকা নাঈম ইসলামই সব হিসেব পাল্টে দেন। কি দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন দুইজন। তৃতীয় উইকেটে ১৩৬ রানের জুটি গড়েন দুইজন। তাতেই ম্যাচ অনেকটা ড্র’র দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। দুইজনই আবার শতক করেন। ফরহাদ ২৪৬ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৯ রান করে আউট হলেও নাঈম শেষ পর্যন্ত উইকেট আঁকড়ে থাকেন। ফরহাদের আউটের পর পঞ্চম উইকেটে ধীমান ঘোষকে নিয়ে ৭১ রানের ও সপ্তম উইকেটে সোহরাওয়ার্দী শুভকে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়েন। তাতেই ম্যাচ ড্র হয়ে যায়। যেখানে হারের সম্ভাবনা ছিল, সেখানে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে উত্তরাঞ্চল। নাঈম শেষ পর্যন্ত ২৪৩ বলে ১১ চার ও ১ ছক্কায় ১২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। দলকে হার থেকে বাঁচিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৮ উইকেটে যখন ৪০৩ রান করে উত্তরাঞ্চল তখন দক্ষিণাঞ্চল থেকে ১৪৪ রানে এগিয়ে যায়। তখনই বোঝা হয়ে যায় ম্যাচ থেকে আর ফল বের করা সম্ভব নয়। তাই দিন শেষ হওয়ার একঘণ্টা আগেই দুই দলের সম্মতিতে চতুর্থদিন শেষ করা হয়। স্কোর ॥ মধ্যাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল ম্যাচ- ফতুল্লা ॥ মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস-৩২৮/১০; শরীফ ৭০; জায়েদ ৫/৭৭ ও দ্বিতীয় ইনিংস তৃতীয়দিন ২৬৬/৫; মার্শাল ৭৩, তাইবুর ৫৫*, মেহরাব জুনিয়র ৩৮, সোহান ৩২*; মুমিনুল ২/৩৯ এবং চতুর্থদিন ২৮২/৭; ৬৯.৩ ওভার; ইনিংস ঘোষণা (তাইবুর ৫৭, সোহান ৪৫)। পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংস-তৃতীয়দিন ২১১/১০; (ইয়াসির ৪৮*, আবুল ৪৮; শরীফ ৪/৫৯ ও দ্বিতীয় ইনিংস (টার্গেট ৪০০ রান) ১৭২/১০; ৫৬.২ ওভার (কাপালী ৭১; শুভাগত ৪/৪৬)। ফল ॥ ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল ২২৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ মোহাম্মদ শরীফ (মধ্যাঞ্চল)। দক্ষিণাঞ্চল-উত্তরাঞ্চল ম্যাচ- বিকেএসপি ৪ ॥ দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস-৫০১/১০; (তুষার ২২০, নাফীস ৭৪, মোসাদ্দেক ৫৭; সোহরাওয়ার্দী ৪/১০৫, নাসির ২/৭৭)। উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস- ২৪২/১০; ৬২.২ ওভার; (ধীমান ৬৭; নাহিদুল ৫/১০৪, রাজ্জাক ৩/৭৪ এবং দ্বিতীয় ইনিংস তৃতীয়দিন ১৫৪/২; ৬১ ওভার (ফরহাদ ৬২*, জুনায়েদ ৪৬, নাঈম ২৪*; মোসাদ্দেক ১/৩২) এবং চতুর্থদিন ৪০৩/৮; ১৩৭ ওভার (নাঈম ১২৯, ফরহাদ ১১৯, ধীমান ৪১, সোহরাওয়ার্দী ২৬; নাহিদুল ৫/১৩০)। ফল ॥ ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা ॥ তুষার ইমরান (দক্ষিণাঞ্চল)।
×