ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মেডিক্যাল ট্যুরিজম চালু, সৈকতে ভ্রমণ ও চিকিৎসা দুটোই মিলবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

মেডিক্যাল ট্যুরিজম চালু, সৈকতে ভ্রমণ ও চিকিৎসা দুটোই মিলবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার চালু হয়েছে মেডিক্যাল ট্যুরিজম।একই সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে ভ্রমণ ও চিকিৎসা দুটোই চলবে। নৈসর্গিক পরিবেশ মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে তা নিরূপণে হাজির হয়েছে ভেনটেজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। থাইল্যান্ডের পাতায়ায় প্রতিষ্ঠিত ওই মেডিক্যাল ট্যুরিজম সেন্টারের কর্ণধার রাশিয়া প্রবাসী এক বাংলাদেশী চিকিৎসক অধ্যাপক মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, বাজারে যেসব খাবার বিক্রি হয় এর প্রায় সবই এ্যাসিডিটিযুক্ত। ৯৯ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন বাধ্য হয়ে এসব খাবার খায়। এ কারণে মানুষের দেহে দেখা দেয় নানা সমস্যা। আর এ সমস্যা থেকে ৩০ দিনে প্রাকৃতিক উপায়ে রোগমুক্ত জীবনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করছে ‘ভেনটেজ ন্যাচারাল হেলদি ফুড এ্যান্ড হেলথ কেয়ার লিমিটেড’। রাজধানীর তোপখানা রোডে প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশ কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। ভ্যান্টেজ প্রেসিডেন্ট ডা. মুজিবুর রহমান মূলত একজন কার্ডিওলজিস্ট। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এই রুশ নাগরিক নিজের চেষ্টা ও মেধায় থাইল্যান্ডের পাতায়াতে গড়ে তুলেছেন এ প্রতিষ্ঠানটি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বাজারে যেসব খাবার পাওয়া যায় এর প্রায় সবই এ্যাসিডিটিযুক্ত। কিছু ব্যক্তি শুধু ব্যবসায়িক চিন্তা করে বিবেক-বিবেচনা হারিয়ে এসব খাবার বিক্রি করে। এ ধরনের খাবার খেয়ে মানুষ বিভিন্ন মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রচুর টাকা চিকিৎসার পেছনে ব্যয় করছে। বয়সজনিত কারণে মানুষের খাবারের অভ্যাস ও লাইফস্টাইল পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। ডায়াবেটিস, হার্ট ডিজিজ, উচ্চ রক্তচাপ, লিভারের সমস্যা, ইউরিক এ্যাসিডের সমস্যা, শরীরের বিষক্রিয়া, আর্থ্রাইটিস, এলার্জি, এ্যাজমা, ওজন সমস্যা, মাইগ্রেন, স্কিন ও হেয়ারসহ ৬০ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। মূলত খাদ্যাভাসের কারণে মানুষের বডি এলক্যালাইন থেকে এ্যাসিডে চলে এলে এ ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, মানুষের দেহ যদি এ্যালকালাইন থেকে এ্যাসিডে চলে আসে তখন শরীর দুর্বল লাগে, অসুস্থবোধ করে, শরীরের বিভিন্ন কোষ নষ্ট হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে আসে। এ সময় ওষুধ খেয়ে প্রাথমিকভাবে সামাল দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এই সমস্যা এক পর্যায়ে ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে। একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ৬০ শতাংশ এ্যালকালাইন ফুড খেতে হবে, আর ৪০ শতাংশ এ্যাসিডিক খাবার। তবে কেউ যদি এ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত হয়ে যায় তার জন্য ৯০ শতাংশ এ্যালকালাইন খাবার খেতে দিতে হবে। তিনি জানান-সব ধরনের শাকসবজি, ফলমূল, হারবাল টি, গ্রিন টি এ্যালকালাইন জাতীয় খাবার। আর বাকিগুলো হচ্ছে এ্যাসিডিক জাতীয় খাবার। চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে অর্গানিক উপায়ে তৈরি খাবার খেয়ে শরীরকে এ্যালকালাইনে রাখা যায়। এই জন্য বাজারের শাকসবজি ত্যাগ করে গ্রামে অর্গানিক পদ্ধতিতে তৈরি শাকসবজি খেতে হবে। ডা. মুজিবুর রহমান পরামর্শ দিয়ে বলেন, মানুষের শরীর এ্যালকালাইনে রাখতে হলে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে অর্ধেক লেবুর রস ও পরিমিত হিমালয়ান স্টু মিশিয়ে খেতে হবে। এ পানি এ্যালকালাইন ওয়াটার হিসেবে কাজ করে। জাপানীরা এ্যালকালাইন ওয়াটার বাজারজাত করে থাকে, তবে তা ব্যয়বহুল। তবে ইতোমধ্যে যারা এ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ভেনটেজ নেচারাল হেলদি ফুড এ্যান্ড হেলথ কেয়ার লিমিটেড সেবা দিয়ে থাকে বলে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কোন ধরনের পাশ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া মাত্র ৩০ দিনে প্রাকৃতিক উপায়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে পাতায়াতে অবস্থিত তার প্রতিষ্ঠানটি। এই ৩০ দিন সেখানে থাকা-খাওয়া ও অন্যান্য সেবা গ্রহণের জন্য একজনকে পাঁচ হাজার ডলার ব্যয় করতে হবে। এ সময় রোগীকে প্রতিদিন পাঁচ বেলা অর্গানিক সুপার ফুড দেয়া হবে। এছাড়া আমেরিকান ও জাপানী প্রযুক্তির তৈরি তিনটি যন্ত্র দিয়ে রোগীর শরীর থেকে মাত্রাতিরিক্ত এ্যাসিডিটি পরিষ্কার করে অক্সিজেন প্রদান ও এ্যালকালাইন জাতীয় খাবার দেয়া হবে। বাংলাদেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান চালুর সম্ভাবনা আছে কিনা জনকণ্ঠের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান-পাতায়াতে প্রতিষ্ঠানটি ৫৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। সেখানে ৬০ রোগীকে একসঙ্গে চিকিৎসা দেয়া যায়। তবে সুযোগ পেলে বাংলাদেশের কোন পাহাড়ী বা সমুদ্র অঞ্চলের মনোরম পরিবেশে একই ধরনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চান ডা. মুজিবুর রহমান। এ জন্য স্বল্পমূল্যে উপযুক্ত পরিবেশে জমি খোঁজা হচ্ছে।
×