ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

আলতাফ মাহমুদ পদক পেলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৩১ আগস্ট ২০১৬

আলতাফ মাহমুদ পদক পেলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানের সুরস্রষ্টা শহীদ আলতাফ মাহমুদের অন্তর্ধান দিবস ছিল মঙ্গলবার। দিনটিতে শ্রদ্ধা-ভালবাসায় স্মরণ করা হলো দেশের স্বাধীনতার এই সূর্য সৈনিককে। আর তার নামাঙ্কিত সম্মাননায় ভূষিত করা হয় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। কালের এই আদর্শ শিক্ষক সত্যপথযাত্রীকে প্রদান করা হয় শহীদ আলতাফ মাহমুদ পদক ২০১৬। শরতের সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শহীদ আলতাফ মাহমুদ ফাউন্ডেশন। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর হাতে সম্মাননা পদক তুলে দেন আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী শহীদজায়া সারা আরা মাহমুদ। উত্তরীয় পরিয়ে দেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও প্রাবন্ধিক মফিদুল হক। পদকের সম্মানী তুলে দেন আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অভিনয়শিল্পী শিমূল ইউসুফ। পদকপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এই সম্মাননা আমি প্রত্যাশা করিনি। হয় তো আলতাফ মাহমুদ যে পথের যাত্রী ছিলেন আমিও সেই পথ অনুসরণ করছি- এ কারণেই আমাকে এই সম্মাননা দেয়া হলো। এই পুরস্কারপ্রাপ্তিতে আনন্দ ও গর্ব হচ্ছে। একইসঙ্গে আবার বেদনাও বোধ করছি। কারণ, আলতাফ মাহমুদের মতো মানুষরা রক্ত দিয়ে আমাদের এই স্বাধীন দেশটি দিয়ে গেছেন। আর আমরা তার সুফল ভোগ করছি। কিন্তু আলতাফ মাহমুদ যে নতুন সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা আজো বাস্তবায়িত হয়নি। যে সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন তা আজো অর্জিত হয়নি। আয়োজনের শুরুতেই সূচনা সঙ্গীত পরিবেশন করেন শারমিন সাথী ময়না। প্রথমেই গেয়ে শোনান নজরুলসঙ্গীত ‘শূন্য এ বুকে পাখি মোর আয় ফিরে আয়’। দ্বিতীয় পরিবেশনায় তিনি বেছে নেন আলতাফ মাহমুদের সুরারোপিত একটি গানকে। গেয়ে শোনান ‘ধন্য জীবন ধন্য তোমার’। সদ্যপ্রয়াত কবি শহীদ কাদরীর ‘সংহতি’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী হাসান আরিফ। এছাড়াও তিনি পাঠ করেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও আলতাফ মাহমুদকে নিবেদিত শংসা বচন। শিল্পকলায় দুই দিনব্যাপী লালন উৎসব ॥ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত-নৃত্যকলা ও আবৃত্তি মিলনায়তনে লালন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শুরু হলো লালন উৎসব। সোমবার সন্ধ্যায় দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন লালন গবেষক ও শিক্ষাবিদ ড. আনোয়ারুল করিম। আলোচনা শেষে ফরিদা পারভীনের কণ্ঠ আশ্রিত লালনের গানে উৎসব হয়ে ওঠে বর্ণময়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লালনের গানের যথেচ্ছাচার হচ্ছে বলেন মন্তব্য করেন প্রখ্যাত লালনসঙ্গীত শিল্পী ফরিদা পারভীন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাউলদের অনেকেই লালনের এক গানের মধ্যে আরেক গানের কথা ঢুকিয়ে দেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আনোয়ারুল করিম ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতে লালনপ্রভাব’ শীর্ষক বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ বহুবার বলেছেন, তিনি লালনের গানে প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি অকপটভাবে স্বীকার করেছেন, তিনি তার গানে লালনের ভাবটি নিয়েছিলেন। আলোচনা শেষে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন ফরিদা পারভীন। শ্রোতার হৃদয়ে প্রশান্তি ছড়িয়ে একে গেয়ে শোনান ‘পারে লয়ে যাও আমায়’, ‘কে যাবি নবীর নৌকাতে আয়’, ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘যেখানে সাঁইয়ের বারামখানা’, ‘বাড়ির পাশে আরশিনগর’সহ বেশ কয়েকটি গান। আজ বুধবার একই মিলনায়তনে উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে বিকেল সাড়ে ৫টায়। স্বরচিত্রের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে ‘ইতিহাসের জ্যোর্তি-বলয়’ শিরোনামে আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আবৃত্তি সংগঠন স্বরচিত্র। মঙ্গলবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মাহিদুল ইসলামের গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় শুধুমাত্র কবিতা দিয়ে সাজানো এ আয়োজনে শুরুতেই স্বরচিত্রের বাকশিল্পীরা আবৃত্তি করে শোনান মীর মোশাররফ হোসেনের ‘বলছে তারা’। এর পর একক কণ্ঠে আবৃত্তি করেন সম্মিরুন ইসলাম, আবদুর রহমান নূর, তাসমী চৌধুরী, তামান্না ডেইজি, আবুল হাসনাত রানা, শিপ্রা রহমান প্রমুখ। তারা আবৃত্তি করে শোনান আবদুস সাত্তারের ‘একটি অমিয় নাম’, আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ‘বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা’, আসাদ চৌধুরীর ‘আমাকে দিয়েছিলে অসীম আকাশ’, নির্মলেন্দু গুণের ‘আগস্ট শোকের মাস, কাঁদো’ ও ‘আমি আজ কারও রক্ত চাইতে আসিনি’, শামসুর রাহমানের ‘ইতিহাসের জ্যোতিঃবলয়’। অতিথি আবৃত্তি শিল্পী হিসেবে আবৃত্তি করেন মাসুম আজিজুল বাশার, তামান্না সারোয়ার নীপা, সোহেল আনোয়ার প্রমুখ।
×