ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জোয়ারের পানি ভোলার পানচাষীদের হাসি কেড়ে নিয়েছে

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২০ আগস্ট ২০১৬

জোয়ারের পানি ভোলার পানচাষীদের হাসি কেড়ে নিয়েছে

হাসিব রহমান, ভোলা ॥ জোয়ারে সৃৃষ্ট বন্যার পানি নেমে গেলেও পানচাষীদের মুখে হাসি নেই। তাদের অতি যতেœর অর্থকরী ফসল পানগাছের গোড়ায় পচন দেখা দিয়েছে। গত এক বছর ধরে লাখ লাখ টাকার পুঁজি খাটিয়ে ফলন ঘরে তোলার আগে তাদের পানগাছ মরে যাওয়ায় তারা এখন চরম বিপাকে পড়েছে। টানা দুই সপ্তাহের পানিতে কোটি কোটি টাকার পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। শুকিয়ে বিবর্ণ নষ্ট পান এখন গবাদিপশুর খাবারে পরিণত হয়েছে। কৃষকরা কিভাবে ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে তা নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এ দুঃসময়ে কৃষি বিভাগের কোন কর্মী তাদের কোন পরামর্শ দেয়নি বলে অভিযোগ করেছে পানচাষীরা। স্থানীয়রা জানিয়েছে, পান চাষের জন্য বিখ্যাত দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ভোলা সদরের উত্তরের ইউনিয়ন ইলিশা ও রাজাপুর। এখান থেকে কৃষকদের উৎপাদিত পান ভোলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় পাইকারি বাজারে পাঠানো হয়। এ এলাকার কয়েক শ’ একর জমিতে তিন শতাধিক চাষী গত বছর পানের বরজ করে। কৃষি বিভাগের মতে, গত বছর ভোলা জেলায় প্রায় ১৪শ’ একর জমিতে পানের আবাদ করা হয়। আর উৎপাদন হয় এক লাখ ৩৮ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন পান। পানের আবাদ ভাল হওয়ায় কৃষকরা তাই পান চাষে ঝুঁকে পড়ে। কৃষক সফিজল জানান, এক বছর ধরে রোপিত পানগাছ ধীরে ধীরে বড় হয়। পানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকদের মনে নানা স্বপ্ন দানা বাঁধে। তাদের স্বপ্ন যখন বাস্তবে রূপ নেবে তার ঠিক আগ মুহূতে সর্বনাশা মেঘনা সব কেড়ে নিয়ে গেছে। ইলিশা ও রাজাপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানিতে পানের বরজ ৩-৪ ফুট পানিতে দুই সপ্তাহ ডুবে থাকে। কিছুদিন আগে পানি নেমে গেলেও পানগাছের গোড়ায় পচন দেখা দিয়েছে। এতে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে আর পান লালচে ও হলুদ বর্ণ হয়ে ঝরে পড়ছে। এদিকে অমাবস্যার জোতে ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ দিয়ে ফের পানি ঢুকলে বরজের অস্তিত থাকবে কি-না তা নিয়ে কৃষকরা অজানা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। কৃষকদের দাবি, দ্রুত বাঁধ সংস্কার করে তাদের যেন পানি থেকে রক্ষা করা হয়। তা না হলে শত শত কৃষক পরিবার পথে বসে যাবে।
×