ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক যুগেও পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি বগুড়া সেন্ট্রাল মসজিদ কমপ্লেক্স

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ২৮ মে ২০১৬

এক যুগেও পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি বগুড়া সেন্ট্রাল মসজিদ কমপ্লেক্স

সমুদ্র হক ॥ বগুড়া শহরের বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদটি প্রায় এক যুগেও পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি। অর্ধেক কাজ হওয়ার পর আর কোন অগ্রগতি নেই। এর মধ্যেই প্রায় ৮ বছর আগে ২ হাজার ৮ সালের জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ শুক্রবার জুমার নামাজ কায়েমের মাধ্যমে মুসল্লীদের নামাজের জন্য অনানুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এরপর মসজিদের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে বিচ্ছিন্নভাবে মানুষের দানে কিছু বৈদ্যুতিক পাখা, আংশিক সাউন্ড সিস্টেম ও কার্পেট হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নে আর কোন কাজই হয়নি। বহুমুখী কমপ্লেক্স নির্মাণের লক্ষ্যে মসজিদের চার ধারে ওপর তলায় ওঠার যে সুপরিসর সিঁড়ি নির্মিত হয়েছে তার একটিও ব্যবহার হয় না। তিন দিকের সিঁড়ির নিচে আগাছা জন্মে এমন অবস্থা যা মাদকাসক্তদের আখড়ায় পরিণত। স্টেশন রোডের উত্তরধারের সিঁড়িটি মোটামুটি পরিষ্কার তবে সন্ধ্যার পর সেখানেও মাদকসেবীরা জড়ো হয়। কথা ছিল মসজিদের সামনের জায়গায় ঈদগাহ হবে তাও হয়নি। হালে কয়েকটি ফুলগাছ লাগিয়ে কিছুটা সুন্দর করা হয়েছে। এই মসজিদের আয়তন ২৫ হাজার ৬শ’ বর্গফুট। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর প্রকল্পে আছে ৭ হাজার ৩শ’ ৫০ জন মুসল্লী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। দ্বোতলার ৭ হাজার ২শ’ বর্গফুট অংশে নামাজ আদায় হবে। নিচতলায় থাকবে পাঠাগার, মহিলাদের নামাজের জায়গা ও মাহফিলের স্থান। এখানে তিন শ’ মহিলা নামাজ আদায় করতে পারবেন। বর্তমানে নিচতলায় স্বল্পপরিসরে কোনরকমে পাঠাগার স্থাপিত হয়েছে। আরেক অংশে পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজ আদায় করা হয়। ওপর তলায় নামাজের কোন ব্যবস্থাই হয়নি। পবিত্র রমজান মাসে জুমার নামাজে নিচতলায় মুসল্লীদের স্থান সঙ্কুলান না হলে ওপর তলায় চাদর বিছিয়ে নামাজের আয়োজন করা হয়। মসজিদের গম্বুজটি দীর্ঘদিন ফাঁকা থাকার পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন উদ্যোগ নিয়ে কিছুদিন আগে তা নির্মাণ করেন। তবে তা নক্সা অনুযায়ী হয়নি। ৫৪ ফুট ব্যাসার্ধের গম্বুজ হয়েছে। প্রকল্পে ছিল এই চূড়ায় বিশেষ ধরনের কাচ থাকবে যা নামাজের স্থানকে দিনের আলোয় স্নিগ্ধভাবে আলোকিত করবে। কথা ছিল মসজিদের নিচতলার তিন ধারে ১৭ হাজার ৪শ’ বর্গফুট আয়তনের খোলা চত্বরে ঈদের নামাজ আদায় করা হবে। প্রয়োজনে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা যাবে। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সূত্রের খবর ॥ নক্সা অনুযায়ী মসজিদটি এ ও বি দুই জোনে বিভক্ত। এ জোনের অংশে মসজিদের মূল ভবন। যার ওপর দ্বিতল অংশ থাকবে সরাসরি। নিচতলায় সিঁড়ি ছাড়াও ৬ হাজার বর্গফুট এবং দ্বোতলায় ৭ হাজার ২শ’ বর্গফুট। নামাজ আদায় হবে দ্বোতলায়। বি জোনে থাকবে মহিলাদের নামাজের ব্যবস্থা। আরেক ধারে ওজু খানা, শৌচাগার। বি জোনেই থাকবে বড় লাইব্রেরি ও তার ধারে সেমিনার কক্ষ। এ ও বি দুই জোনের কাজের মধ্যে কোন জোনেরই কাজ ঠিকমতো হয়নি। এখনও অনেক কাজ বাকি। বর্তমানে বি অংশের এক ধারে নামাজের স্থান। বাকি অংশের কিছু জায়গা ইসলামী ফাউন্ডেশনের শাখা করা হয়েছে। সূত্র জানায়, এ যাবত ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। নক্সা অনুযায়ী কাজ করতে আরও অন্তত ২ কোটি টাকা দরকার। এর আগে মসজিদ উন্নয়ন কল্পে কথা হয়েছিল ঢাকার বায়তুল মোকাররমের মতো করে মসজিদের চারধারে মার্কেট নির্মাণ করে দোকান ভাড়া দিয়ে সেই অর্থে দিনে দিনে মসজিদের উন্নয়ন করা হবে। এই কাজ আর এগোয়নি। মসজিদকে ঘিরে চারধারে যে সিঁড়ি বানানো হয়েছে তা বর্তমানে কোন কাজেই আসছে না। মসজিদটিকে ঘিরে যে বড় পরিকল্পনা ছিল তাও কার্যত ভেস্তে যেতে বসেছে।
×