স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোমবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হলো বুনন থিয়েটারের নাটক নকশী কাঁথার মাঠ। নাট্যপ্রদর্শনীর পাশাপাশি একই আয়োজনে সংবর্ধনা জানানো হয় চিত্রপরিচালক সৈয়কত নাসিরকে। অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ ছিল শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল।
প্রদর্শনীর পূর্বে বুনন থিয়েটারের কর্মী ও চিত্রপরিচালক সৈকত নাসিরকে থিয়েটারের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সৈকত নাসির পরিচালিত দেশা দ্যা লিডার চলচ্চিত্রটি ২০১৪ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা চিত্রনাট্যসহ মোট চারটি পুরস্কার অর্জন করে। আর এই প্রাপ্তির আনন্দ উদযাপনে নাট্যপ্রদর্শনীর সঙ্গে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজর করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চিত্রপরিচালক জাকির হোসেন রাজু ।
ঘেঁটু গানের আঙ্গিকে নির্মিত নাটক নকশী কাঁথার মাঠ। পল্লীকবি জসীমউদ্দীন রচিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনন জামান।
নকশী কাঁথার মাঠ নাটকে দেখা যায়, বৃষ্টির জারি আর মাঙনের গীত গেয়ে শিন্নির রসদ সংগ্রহের সময়- ভাব বিনিময় হয় সাজু ও রূপাইয়ের। ভালোবাসা পরিণতি পায় সম্পর্কের বন্ধনে। বিবাহ পরবর্তী রাতে সাজু দুঃস্বপ্ন দেখেÑ ঘন অন্ধকারে এক অনামা অচেনা দেশে রূপাই হারিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তীতে চর দখলকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনায় ফেরার হয় রূপাই। শুরু হয় সাজুর দুঃখময় বিরহ সময়। সাজু তার নকশী কাঁথার নানা বরণের সুতায় সুতায় এঁকে রাখে বুকে জমা সব ব্যথা। রূপাই তো আসে না কিছুতেই। সাজুর মনে এসে ভর করে তাদের প্রণয়ের পূর্ণ মুহূর্তগুলো। একপর্যায়ে বিরহ শোকে মৃত্যু হয় সাজুর। বেশ কিছুকাল পরে এক গভীর রাতে গভীর ব্যথাময় বাঁশির সুর শুনতে পায় গাঁয়ের মানুষজন। ভোরে এসে তারা দেখে সাজুর কবরের পাশে পড়ে আছে রূপাইয়ের প্রাণহীন শরীরটি। তার বুকে জড়ানো সেই নকশী কাঁথাÑ যার গায়ে আঁকা আছে প্রণয়ের মধুময় ছবি।
নির্দেশনা প্রসঙ্গে আনন জামান বলেন, প্রযোজনাটির অভিনয় নির্মাণের ক্ষেত্রে কাব্যের স্বভাবজাত প্রকাশভঙ্গি তৈরির পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাটকের স্টাইলাইজ্ড এ্যাকটিং ও বর্ণনাভঙ্গি এবং ঘেঁটুগানের চরিত্রাভিনয়রীতি ও সঙ্গীত স্বভাব প্রয়োগের প্রচেষ্টা ছিল। নকশী কাঁথার মাঠ নাটকে রূপাই ও সাজুর পূর্বরাগ তৈরিতে মাঙন গীত ও বৃষ্টির জারির একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। সেট হিসেবে চারটি কাঠের প্লাটফর্ম দিয়ে বৃষ্টির জারির চৌকাণা খোলা মঞ্চের আদল ব্যবহার করেছি। উপরে চারটি হারিকেন ঝুলিয়ে দিয়ে আসর কেন্দ্রিক পরিবেশনার আবহ নির্মাণের অভিপ্রায় ছিল।
প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অমৃতাভ মিহির, তুষার কান্তি দে রাজন, দিদারুল দিপু, আবু ফাহিম, বুলবুল আহমেদ, সুবহে সাদিক, রোমান, কাকন, মারিয়া, শ্রাবন্তী লিজা, পাপ্পু, উজ্জ্বল, শম্পা রাজবংশী, ইমতিল ইমু ও জসিম।
