ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ পাবে গ্রাহক

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৩ এপ্রিল ২০১৬

মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদলের সুযোগ পাবে গ্রাহক

ফিরোজ মান্না ॥ বহু প্রতিক্ষীত এমএনপির (মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি) নিলাম এ মাসেই। এমএনপি নিলামের জন্য গাইডলাইন ইতোমধ্যে সংশোধন আনা হয়েছে। এ সপ্তাহেই অপারেটরদের কাছ থেকে আবেদন নেয়া হবে। যদিও অপারেটররা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এমএনপি নিলামের সময় বাড়ানোর আবেদন করেছে। অপারেটররা বলছে, বেঁধে দেয়া সময়সীমার মধ্যে এই বিরাট কর্মযজ্ঞ শেষ করা সম্ভব হবে না। তারা আগামী মে- জুনে এমএনপি সেবা চালু করতে পারবে। অপারেটরদের এমন আপত্তি মন্ত্রণালয় কোন আমলে নেয়নি। কারণ এর আগে কয়েক দফা নিলামের সময় পেছানো হয়েছে। এখন আর কোন সময় বাড়ানো হবে না। অপারেটর বদলানোর সুযোগ (এমএনপি) প্রদানের বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব এই সেবা কার্যকর করা হবে। এটা আরও আগেই করা হতো। গাইডলাইনে কিছু সংশোধন আনার কারণে নিলাম কিছুটা পিছিয়ে এপ্রিলে নিয়ে আসা হয়েছে। এমএনপি নিলামে অপারেটরদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারবে না। এ সপ্তাহের মধ্যে অপারেটরদের কাছ থেকে আবেদন নেয়া হবে। এমএনপি চালু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি গত বছরের শেষ দিকে এমএনপি চালুর জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। সূত্র জানিয়েছে, এমএনপি সেবা চালুর বিষয়ে বিটিআরসি দীর্ঘ চার বছর আগে থেকে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করলেও এমএনপি সেবা আলোর মুখ দেখেনি। এই সেবায় গ্রাহকরা ইচ্ছা করলেই নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর বদল করতে পারবে। এবার ডাক ও টেলিযোগাযোগা প্রতিমন্ত্রী গ্রাহকদের সুবিধার্থে প্রস্তাবটির বিষয়ে ইতিবাচক হয়েছেন। এমএনপি চালু করতে মন্ত্রণালয়ের কোন আপত্তি নেই। যত দ্রুত সম্ভব এটা চালু করা হবে। তখন গ্রাহকরা ইচ্ছে মতো অপারেটর বদল করতে পারবেন। ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, এমএনপির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন আর এ সেবা চালু করতে আর কোন বাঁধা নেই। আমরা গ্রাহক সুবিধার্থে এই সেবা চালু করতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ও এমএনপি সেবার ওপর জোর দিয়েছেন। এতে গ্রাহক পর্যায়ে উপকার হবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে সহায়ক হবে। এমএনপি সেবার নিলাম জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। গাইডলাইনেও কিছু সংশোধন আনা হয়েছে। মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। অপারেটরদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছে বিটিআরসি। তারা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। একটা জটিলতা ছিল এমএনপি চালু করার বিষয়ে। ওই জটিলতা কেটে গেছে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর। সূত্র জানিয়েছে, এমএনপি চালু হলে গ্রাহকের সুবিধা বাড়বে। তখন কোন অপারেটরের কি সুবিধা সেই সুবিধা গ্রাহকরা সুবিধামতো অপারেটর বদল করে নিতে পারবে। মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি সুবিধা চালু করতে বিটিআরসি একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেবে বলে গত মে মাসে জানিয়েছে। এমএনপি সুবিধা চালুর বিষয়ে সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. শাজাহান মাহমুদ বলেন, নম্বর না বদলে গ্রাহকদের অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে ২০১৩ সালের জুনে মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছিল বিটিআরসি। অপারেটরদের ২জি লাইসেন্স নবায়ন করার সময় এই নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু নানা কারণে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এখন সব কারণ দূর করে এমএনপি চালু করার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গাইডলাইনে অনুযায়ী অপারেটররা এমএনপি চালু করেনি। উল্লেখ্য, বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, ভারত ও পাকিস্তানে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) সেবা চালু রয়েছে। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে পথ চলতে হলে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশেও এমএনপি সেবা চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে গ্রাহক সেবাও বাড়বে। গ্রাহকদের সুবিধার জন্য দেশে এই সেবা চালু করা হচ্ছে।
×