ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লোড ব্যবস্থাপনা সামাল দিতে কমিটি গঠন

গ্রীষ্ম সামনে- দুশ্চিন্তায় বিদ্যুত বিভাগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

গ্রীষ্ম সামনে- দুশ্চিন্তায় বিদ্যুত বিভাগ

রশিদ মামুন ॥ গ্রীষ্ম সামনে রেখে দুশ্চিন্তায় পড়েছে বিদ্যুত বিভাগ। প্রধান জ্বালানি গ্যাসের স্বল্পতায় বিদ্যুত উৎপাদন বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) কে প্রধান করে নয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কিমিটিকে সারাদেশের লোড ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছর গ্রীষ্মে অন্তত সাড়ে আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হবে। বিদ্যুত কেন্দ্রের উৎপাদন স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৩ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি হলেও প্রধান জ্বালানি গ্যাসের সঙ্কটই গ্রীষ্মে ভোগাবে গ্রাহককে। পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না পেলে বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ রাখতে হবে। সম্প্রতি বিদ্যুত বিভাগ গ্রীষ্মে সার কারখানা বন্ধ এবং সিএনজি স্টেশনে রেশনিং করে বিদ্যুতকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী বিদ্যুতে সঙ্কট বৃদ্ধি পেলে যমুনা সার কারখানা ছাড়া অন্যসব সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেবে পেট্রোবাংলা। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, লোড ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টারের (এনএলডিসি) মহাব্যবস্থাপককে। এছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, বিদ্যুত বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (সমন্বয়), পিডিবির সদস্য জেনারেশন এবং বিতরণ, আরইবির সদস্য বিতরণ এবং পরিচলন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক, ঢাকার দুই কোম্পানি ডেসকো এবং ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়াও কমিটিতে আছেন জোয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, ডিসেম্বর থেকে সেচ মৌসুম শুরু হলেও মার্চ থেকে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত সেচে বিদ্যুত চাহিদা বেশি থাকে। একই সময়ে গ্রীষ্ম মৌসুম থাকায় বিদ্যুতের চাহিদাও সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। তরল জ্বালানি এবং গ্যাসচালিত বিদ্যুতকেন্দ্রগুলো পুরোদমে না চালালে সঙ্কট সামাল দেয়া কঠিন হবে। গত বছর বা তার আগের বছরগুলোতেও গ্রীষ্ম মৌসুমে শহরাঞ্চলে সরবরাহ অনেকটা স্বাভাবিক ছিল। সরকার সারাদেশে স্বাভাবিক সরবরাহের কথা বললেও গ্রামে চাহিদা এবং সরবরাহে মারাত্মক ঘাটতি ছিল। এই অবস্থায় পেট্রোবাংলা পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ না দিতে পারলে গ্রীষ্মে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হবে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে, প্রায় প্রতিদিনই নতুন করে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, মাসে গড়ে তিন লাখ নতুন গ্রাহক বিদ্যুত পাচ্ছেন। এতে বছরে অন্তত ৩৬ লাখ নতুন গ্রাহক বিদ্যুত পাচ্ছেন। এতে নতুন পুরাতন মিলিয়ে চলতিবছর দেড় হাজার মেগাওয়াটের নতুন চাহিদা তৈরি হয়েছে। আগের গ্রাহকের সঙ্গে চলতি বছরের বর্ধিত চাহিদা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হবে। পিডিবির তরফ থেকে গ্রীষ্মে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে দৈনিক এক হাজার ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ চাওয়া হয়েছে। তবে পেট্রোবাংলা বলছে, তাদের পক্ষে বিদ্যুত উৎপাদনে দৈনিক ৯১৪ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস দেয়া সম্ভব নয়। পিডিবির তরফ থেকে বলা হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ কমে বিদ্যুত কেন্দ্রে সঙ্কট বাড়বে।
×