
ছবি: জনকণ্ঠ
কেশবপুরের মাটিতে সৌদি আরবের খেজুরের চাষ হতে পারে এটা এর আগে কেউ কল্পনাও করেনি সেই কল্পনাকেই বাস্তবে পরিণত করেছেন কেশবপুরের সফল নারী উদ্যোক্তা নুসরাত জাহান লিজা। তিনি বাড়ির আঙ্গিনায় সৌদির খেজুর চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার রোপণ করা সৌদি আরবের খেজুর গাছে এখন লাল টসটসে খেজুর ঝুলছে।
এই সংগ্রামী নারী উদ্যোক্তা দীর্ঘ প্রচেষ্টায় বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে ছয় বছর আগে বাড়ির আঙ্গিনার সারি সারি খেজুর গাছ রোপণ করেছিলেন। এবারই প্রথম কয়েকটি খেজুর গাছে এসেছে ফলন। খেজুর গাছে লাল টসটসে খেজুর ধরেছে। বিদেশি খেজুর দেখার জন্য প্রতিদিনই ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছে।
নুসরাত জাহান লিজার আঙ্গিনায় রয়েছে ৩৫ থেকে ৪০টি সৌদি আরবের সুমিষ্ট খেজুর গাছ। তার এই সাফল্যের কথা জানতে পেরে কেশবপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা লিজার খেজুর বাগানটি পরিদর্শন করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এ অঞ্চলে এর আগে সৌদি খেজুর উৎপাদন হয়নি। প্রথম সৌদি খেজুর উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছেন তিনি। যা দেখে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হবেন।
নারী উদ্যোক্তা নুসরাত জাহান লিজার বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী। সংসারী হলেও এই সাহসী নারী লেখাপড়া ত্যাগ করেননি। তিনি এবার বিএ পরীক্ষার্থী। লেখাপড়া ও সংসার সামলিয়ে তিনি নিজেকে একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সৌদি আরবের খেজুর চাষে ঝুঁকেছিলেন। বাড়ির আঙিনার সামনে সারি সারি রোপণ করেন ৩৫ থেকে ৪০টি সৌদি আরবের খেজুর গাছ। দীর্ঘ পরিচর্যার পর এসব গাছের ভেতর এবারই প্রথম তিনটি গাছে ফলন এসেছে। বাড়ির সামনে লাগানো প্রথম গাছটিতে চার কাঁদি খেজুর ধরেছে। এক এক কাঁদিতে ১০ থেকে ১২ কেজি খেজুর রয়েছে। যা ইতিমধ্যে লাল বর্ণ ধারণ করেছে।
খেজুর গাছ পরিচর্যার সময় নুসরাত জাহান লিজা বলেন, ছয় বছর আগে সৌদি আরব থেকে তাদের এক আত্মীয় হজ্জ শেষে বাড়ি ফেরার সময় ওই দেশের খেজুর নিয়ে আসেন। তাদের ওই সৌদি আরবের থেকে আনা খেজুর খেতে দেন। খেজুর খাওয়ার পর তিনি বীজগুলো সংরক্ষণ করে রাখেন। পরে ওই খেজুরের বীজ বপন করে তা থেকে চারা উৎপাদন করেন। এরপর বাড়ির আঙ্গিনার সামনে রোপণ করেন। বর্তমানে তিনটি গাছে ফলন এসেছে। এছাড়া অধিকাংশ গাছের গোড়া থেকে একাধিক চারা (বোগ) বের হয়েছে। এ সমস্ত গাছের গোড়ায় ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) ব্যবহার করা হয় বলে তিনি জানান। কাঁদির এসব খেঁজুর আগামী এক দেড় মাসের ভেতর পেকে যাবে। পাকলে এসব খেজুর প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২'শ টাকা দরে বিক্রি করা যাবে বলে লিজা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। প্রথমবারেই ওই তিনটি গাছ থেকে উৎপাদিত খেজুর এক লাখ টাকার বেশি বিক্রি করার আশা প্রকাশ করছেন তিনি।
সৌদি খেজুর দেখতে আসা মূলগ্রামের চৈতন্য বলেন, এ অঞ্চলের মাটিতে সৌদি আরবের খেজুর উৎপাদনের কথা শুনে দেখতে এসেছি। গাছের লাল টস টসে খেজুর দেখে আমি অভিভূত। এমন অনেক চাষী প্রতিদিন লিজার বাড়িতে সৌদির খেজুর দেখতে আসছেন এবং তারা তা লাগানোর জন্য উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
আবির