ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দু’দেশের সম্পর্কের ইতিহাস সৃষ্টি হলো ॥ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ পঞ্চগড়বাসীর দীর্ঘ প্রত্যাশিত বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট উদ্বোধন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতসহ পার্শ্ববর্তী নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী ইমিগ্রেশন চেক পোস্টের ফলক উন্মোচন করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জেনারেল (অব) ড. বিজয় কুমার সিংহ। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো। এর আগে ইমিগ্রেশন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের পরম বন্ধু দেশ। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তাদের সহযোগিতা আমরা আজীবন মনে রাখব। ড. বিজয় আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিজেই যুদ্ধ করেছেন। আমাদের স্বাধীনতায় তার অবদান অনেক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আমি এই অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট উদ্বোধনের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে; আরও উন্নত হবে। তিনি বলেন, এই স্থলবন্দর দিয়ে শুধু ভারত নয়; পার্শ্ববর্তী নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা হলো। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের পর্যটকরা খুব সহজেই এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারতে যাবে। আর ভারতের পর্যটকরাও বাংলাদেশে আসবে। ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জেনারেল (অব) ড. বিজয় কুমার সিংহ তার বক্তব্যে বলেন, আমাদের দু’দেশের ভাষা, খানা-দানা ও সংস্কৃতি আলাদা হতে পারে। কিন্তু দু’দেশের মানুষের মধ্যে ভালবাসা অনেক গভীর। কারণ ১৯৭১ সালে আমি বঙ্গবন্ধুর ডাকে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলাম। তখন থেকেই বাংলাদেশের প্রতি আমার আলাদা ভালবাসা বিরাজমান। আর আজকের দিনটি প্রমাণ করে দিল দু’দেশের মানুষের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক আরও গভীর। এর মাধ্যমে দু’দেশের সম্পর্ক আরও গভীর হলো। পঞ্চগড়-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব ফরহাদ হাকিম, নর্থ বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট মিনিস্টার ইনচার্জ গৌতম দেব, দার্জিলিংয়ের এমপি ওয়ালিউল্লাহ ও বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোজাম্মেল হক। এ সময় বিজিবির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এ আজিজ, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, পুলিশ সুপার গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাটসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পদস্থ কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদগণ উপস্থিত ছিলেন। ভারত থেকে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট উদ্বোধনের পর পঞ্চগড় থেকে চেম্বারের নেতৃত্বে একটি দল ফুলবাড়ী ইমিগ্রেশন পোস্ট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করলে তাদের ফুল ও উপহার সামগ্রী দিয়ে বরণ করে নেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। বাংলাবান্ধায় ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট উদ্বোধন উপলক্ষে সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন জিরো পয়েন্টে আসতে শুরু করে। দুপুর হওয়ার আগেই জিরো পয়েন্ট এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি অনুষ্ঠানস্থলে আসার পর ফুলবাড়ী থেকে ভারতীয় প্রতিনিধি দল বাংলাবান্ধায় প্রবেশ করে। এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৩৫ সাংবাদিক। ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ১৪ বছরের মাথায় ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে একই কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর থেকেই এই বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে স্বল্প পরিসরে বাণিজ্য কার্যক্রম চালু হয়।
×