ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের প্রতিবাদ

রামগতিতে সড়ক কেটে অবরোধ বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রামগতিতে সড়ক কেটে অবরোধ বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর, ১০ ফেব্রুয়ারি ॥ রামগতি উপজেলার বয়ারচরের মোহাম্মদপুর বাজারে নোয়াখালী জেলা পুলিশ হাতিয়া থানার অধীনে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বুধবার ভোর থেকে গাছ ও রাস্তা কেটে সড়ক অবরোধ করে রেখেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ সময় দফায় দফায় লাঠিসোটা হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সর্বস্তরের বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে নোয়াখালীর সঙ্গে রামগতির বয়ারচরের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে দুপুরে বয়ারচরের মোহাম্মদপুর বাজার, ফরেস্ট বাজার ও টাংকির বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ বয়ারচরবাসী। এ সময় তারা হাতিয়ার ভূমিদস্যু নেতা মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সেøাগান দেয়। পরে ভূমি দস্যু মোহাম্মদ আলীর কুশপুতুল দাহ করে। সমাবেশে স্থানীয় চরগাজী ইউপি চেয়ারম্যান তাওহিদুল ইসলাম, ভূমিহীন নেতা সোলায়মান, সাইফুদ্দিন খসরু, হেলাল মেম্বার, ফরিদ মেম্বার, সমাজকর্মী ওসমানসহ অন্যান্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ ভুক্তভোগীরা বক্তব্য রাখেন। রামগতির সঙ্গে হাতিয়ার দীর্ঘদিনের সীমানা বিরোধের জের ধরে এসব ঘটনা ঘটেছে। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলেও অনুরূপ কর্মসূচী পালন করে বয়ারবাসী। এতে শুধু বয়ার চরেই রয়েছে আট হাজারেরও বেশি তিন ফসলী উর্বর জমি। এসব জমি গ্রাস করাই ভূমি দস্যুদের মূল উদ্দেশ্য। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভূমিদস্যু ও জলদস্যুরা লক্ষ্মীপুরের রামগতির বয়ারচরের স্থানীয় লোকজনের বাড়িঘরে হানা দিয়ে স্থানীয় লোকজনকে মারধর ও জমির ফসল জোরপূর্বক লুট করে নিয়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটে। ২০০৩ সালে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভূমিদস্যুদের গুলিতে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হওয়ার পর বয়ারচরের মোহাম্মদপুর বাজারের লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশের একটি স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানার অধীনে পুলিশের একটি স্থায়ী ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও নোয়াখালী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম আশরাফুজ্জামান সোমবার লক্ষ্মীপুরের রামগতির মোহাম্মদপুর বাজার পরিদর্শন করে হাতিয়া থানার অধীনে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের কথা জানালে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর অভিযোগ, হাতিয়ার ভূমি দস্যু মোহাম্মদ আলীর লালিত বাহিনী সেখানকার পুলিশ বাহিনীকে নিজেদের লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে বয়ারচরবাসীর ওপর নির্যাতন করে আসছে। তারা যখন তখন তাদের ফসললাদি, গরু মৌষ লুট করে নিচ্ছে। নৌ-ডাকাতিসহ বিভিন্নভাবে তাদের অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। বয়ারচরের বর্তমানে বসবাসরত তাদের ভয়ে প্রতিবাদের ভাষা পর্যন্ত হারিয়ে পেলেছে। গত কয়েক বছরে সেখানে ১২ জন লোক নিহত হয়েছে বলে চরবাসী জানিয়েছে। আহত হয়েছে দু’শতাধিক। বয়ারবাসীকে এটি নোয়াখালীর হাতিয়ার অংশ দাবির অজুহাত তুলে অতর্কিতে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে ৪৫-৫০ বছরের বসত ভূমি থেকে উচ্ছেদের জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে হাতিয়ার ভূমি দস্যুরা। সাধারণ চরবাসীর ওপর হামলা লুট, নির্যাতন যেন নিত্যদিনে পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে বয়ারচরের ওপর লক্ষ্মীপুর জেলা যুগ্ম জজ আদালতের স্থিতি অবস্থায় একটি নির্দেশনামা রয়েছে। হাতিয়ার ভূমিদস্যুরা সে নিষেজ্ঞা উপেক্ষা করেও এলাকাবাসীকে উচ্ছেদ করে তাদের বসতভিটা দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। রামগতির বয়ারচরবাসী জীবন দিয়ে হলেও তাদের অবৈদ দখলবাজদের রুখতে বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে রামগতি থানাধীন চরগাজীর মোহাম্মদপুর ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই ইউছুফ আলী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে।
×