ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে গৃহকর্তার লালসায় অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী প্রসবের আগে অপহৃত

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৩১ অক্টোবর ২০১৫

যশোরে গৃহকর্তার লালসায়  অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী  প্রসবের আগে অপহৃত

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ গৃহকর্তার লালসার শিকার অন্তঃসত্ত্বা স্কুল ছাত্রী সন্তান প্রসবের দু’সপ্তাহ আগে অপহরণের শিকার হয়েছে। এরআগে মেয়েটিকে ধর্ষণের অভিযোগে গৃহকর্তা যশোরের ঝিকরগাছার বাকুড়া গ্রামের দাউদ সরদারের নামে মামলা করেন মেয়েটির মা। মামলার তিনদিন পরই ৮ম শ্রেণীর ওই স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। যদিও দু’মাস আগে তারা ঝিকরগাছা থেকে পালিয়ে যশোর শহরে এসে বসবাস করছিলেন। যশোর কোতোয়ালি থানায় দায়ের মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঝিকরগাছার বাকুড়া গ্রামে প্রতিবেশি হাজী দাউদ সরদারের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন স্কুল ছাত্রীর মা। এসময় তার অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া ১৪ বছর বয়সী মেয়েও দাউদ সরদারের বাড়িতে যাতায়াত করে। সুযোগ সন্ধানী হাজী দাউদ সরদার মেয়েটিকে বাগে পেয়ে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ঘটনা জানাজানি হলে ভিকটিম ও তার পরিবারের সদস্যদের খুন করে ফেলা হবে বলে ভয় দেখানো হয়। এরপর দাউদ সরদার ধর্ষিতাকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র করে। আতঙ্কে দুই মাস আগে মেয়েকে নিয়ে যশোর শহরের বারান্দীপাড়ার তরিকুল ইসলামের ভাড়া বাসায় ওঠেন তারা। ২৩ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে ভিকটিম পাশে আমতলা মোড়ে খাবার কিনতে বাসা থেকে বের হয়। এরপর আর বাসায় ফেরেনি। ওই সময় অজ্ঞাত লোকজন মেয়েটিকে অপহরণ করে। ভিকটিমের মা বলেছেন, দাউদ সরদার ও তার লোকজন মেয়েটিকে অপহরণ করে খুন, গুম করেছে অথবা কোথাও আটকে রেখেছে। অবিলম্বে তার মেয়েকে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ভিকটিমকে আইনী সহায়তা দিতে পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ যশোর জেলা শাখা। সংগঠনটির লিগ্যাল এইড সম্পাদক কামরুন্নাহার কণা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর ১৪ অক্টোবর যশোর জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্টে আগামি ৫ নবেম্বর ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ বলা হয়। এরপর মেয়েটির মা বাদী হয়ে ২০ অক্টোবর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে মামলা করেন। আদালত ঝিকরগাছা থানা পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে। এরপর ২৩ অক্টোবর মেয়েটি নিখোঁজের পরদিন কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। কোন সন্ধান না পেয়ে ২৯ অক্টোবর মেয়েটির মা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেছেন। তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু অভিযুক্ত দাউদ সরদার প্রভাবশালী হওয়ায় ভিকটিমের পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে মেয়েটির পরিবার মহিলা পরিষদের সহযোগিতা চেয়েছে। মেয়েটি যাতে ন্যায় বিচার পায় সেজন্য আমরা কাজ করছি। যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি শিকদার আক্কাছ আলী বলেন, ভিকটিমের মায়ের অভিযোগ বৃহস্পতিবার রাতে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। মেয়েটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে।
×