ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১৮ বছরেও চালু হলো না বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

১৮ বছরেও চালু হলো না বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় ॥ আঠারো বছর পরেও পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন চালু না হওয়ায় হতাশ হয়েছে ব্যবসায়ী সমাজসহ পঞ্চগড়বাসী। ত্রিদেশীয় বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এই স্থলবন্দরটির প্রতিবছর রাজস্ব আয় বাড়লেও শুধুমাত্র ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু না হওয়ায় বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে না। বন্দর ব্যবহারকারী ও কাস্টম কর্তৃপক্ষের দাবি, ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হলে বছরে এই বন্দরে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় সম্ভব। বন্দরসংশ্লিষ্ট একটি নির্ভরযোগ সূত্র বলেছে, ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালুর জন্য বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশ প্রস্তুত। এ জন্য এপারে বাংলাবান্ধা এবং ভারতে ফুলবাড়ি স্থলবন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণসহ ইমিগ্রেশন পুলিশও পোস্টিং দেয়া হয়েছে। তবে, যে কোন মুহূর্তে ঘোষণা দিয়ে এই বন্দরে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হবে মর্মে সূত্রটি জানায়। ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেপালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়। নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যক্রম চলতে থাকলেও ভারত ও ভুটানের সঙ্গে কোন বাণিজ্য কার্যক্রম চলেনি। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ২২ জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে স্বল্প পরিসরে বাণিজ্য কার্যক্রম চালুর পাশাপাশি উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ট্রানজিট কার পাস চুক্তির মাধ্যমে বাংলাবান্ধা ও ফুলবাড়ির ওয়্যার হাউসে পণ্যবাহী ট্রাক যাতায়াত শুরু করে। এর পরই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে এক অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়। প্রতিশ্রুতি ছিল, তিন মাসের মধ্যে এই বন্দর দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতে পারবে। কিন্তু সাড়ে চার বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি। পঞ্চগড় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয় ১৩ কোটি ৮২ লাখ ২৬ হাজার টাকা। আর ২০১১-১২ অর্থবছরে এই বন্দর থেকে মাত্র ১১ কোটি ১৮ লাখ ৭২ হাজার ৬শ’ ৬৪ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল। এতেই প্রতিয়মান যে, প্রতিবছর এই বন্দরে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়ছে। বর্তমান অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি টাকা। আর ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হলে বছরে হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। পঞ্চগড় চেম্বারের নবনির্বাচিত সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেণ্ট এটিএম কামরুজ্জামান শাহানশাহ বলেন, অবস্থানগত কারণে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বন্দর। এখান থেকে দার্জিলিং ৬০ কিলোমিটার ও নেপালের কাকরভিটা সীমান্ত ৩৪ কিলোমিটার। এই স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা চালু হলে পঞ্চগড়ের পাশাপাশি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।
×