ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

চরফ্যাসনে বেড়িবাঁধ ধস; ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি, টেকসই সমাধানের দাবি

প্রকাশিত: ২৩:৪৮, ২৮ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২৩:৫৩, ২৮ জুলাই ২০২৫

চরফ্যাসনে বেড়িবাঁধ ধস; ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি, টেকসই সমাধানের দাবি

চরফ্যাসনের খেজুর গাছিয়ায় মেঘনা নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধের বিশাল অংশ ধসে পড়েছে, এতে হাজারীগঞ্জ ও জাহানপুর ইউনিয়ন সহ পার্শ্ববর্তী কয়েক ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে।এর দুই মাস আগেও ঘুর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে সৃষ্ট তীব্র জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাধটি ভেঙ্গে পড়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে সাময়িক ব্যবস্থা নেয়। এখন সাগরে আবারো নিম্ন চাপ সৃষ্টি হওয়ায় তীব্র জলোচ্ছ্বাসে বেড়ির কয়েকটি অংশ ধসে পড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে, ফলে বেড়িবাঁধটি পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। 


সোমবার (২৮ জুলাই) খেজুর গাছিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জলোচ্ছ্বাসে ধসে যাওয়া বেড়িবাঁধের বাকী অংশে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে জিওব্যাগের মোটা কাপড় দিয়ে বেড়ির অবশিষ্ট অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ফাটল ধরা বেড়িবাঁধের উপরে গাছ ফেলে  যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।খেজুর গাছিয়া এলাকার বাসিন্দা ছাদেক মোল্লা বলেন, কিছু দিন পর পর ঝড় বাদল আসলে প্রশাসনের তোড়জোড় শুরু হয়, ভাঙ্গনের মুখে জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ সাময়িকভাবে মেরামত করা হয়। এর দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চাই। ব্লক দিয়ে তৈরি টেকসই বেড়িবাধ দরকার। আমরা পরিবার নিয়ে আর আতঙ্কের মধ্যে থাকতে চাই না । 


আশি বছর বয়সী বাগন আলী সর্দার বলেন, প্রায় ৩০ বছর হলো খেজুর গাছিয়া বাজার সংলগ্ন বেড়িবাঁধে ব্লক দিয়েছে, অনেক ব্লক নষ্ট হয়ে গেছে। বেড়িবাঁধের ধসে যাওয়া এই অংশে ১৫ টির মতো ঘর ছিলো, তাই প্রয়োজনীয় ব্লক দিতে পারেনি। এখানে বেড়ির নিচের অংশে দীর্ঘ চর ছিলো, গত কয়েক বছর যাবত ভেঙে ভেঙে বেড়ি পর্যন্ত চলে এসেছে, আমরা দেখেছি কয়েকবার জিওব্যাগ দেওয়া হয়েছে, জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে তা টিকেনি। এখন দরকার টেকসই সমাধান। 
  
বেড়িবাঁধ সংলগ্ন চর ফকিরার নাজমা বেগম  বলেন, বেড়ি বাধটি দীর্ঘদিন অবহেলিত, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাময়িক ব্যবস্থা নেওয়া হয়, দুর্যোগ গেলে কেউ খবর রাখে না, আমরা চাই টেকসই বেড়িবাঁধ। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল  লক্ষ লক্ষ বাসিন্দাদের কাছে রক্ষাকবচ হিসেবে পরিনত এই বেড়িবাঁধটি টেকসই করতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। 


পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোলা-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশফাউদ্দৌলা বলেন, সাময়িকভাবে মেরামত করার কাজ আগামীকাল থেকে পুরোদমে শুরু হবে। ব্লক ডাম্পিং এর মাধ্যমে বেড়িবাঁধটি টেইসই করা যাবে, এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে প্রকল্প প্রস্তাবনা দিচ্ছি। আমাদের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বেড়িবাঁধ ভিজিট করেছেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, অতিবর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে হাজারীগঞ্জের বেড়িবাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সাময়িকভাবে জিও ব্যাগ ও ব্লক ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে নতুনভাবে বাঁধটি নির্মাণ করতে হবে। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

আঁখি

×