ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

স্কুল শিক্ষকের লাশ উদ্ধার, স্বজনদের দাবি হত্যাকাণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ১৮ জুলাই ২০২৫

স্কুল শিক্ষকের লাশ উদ্ধার, স্বজনদের দাবি হত্যাকাণ্ড

ছবি: সংগৃহীত

ভাড়াটিয়া বাসা থেকে স্কুল শিক্ষকের লাশ উদ্ধারের পর জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মৃতের স্বজনদের অভিযোগ, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আর পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, শুক্রবার (১৮ জুলাই) দুপুরে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

ঘটনাটি বরিশাল নগরীর করিম কুটির মসজিদ গলি এলাকার। মৃত শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন নগরীর হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তিনি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের হরিদ্রাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ মাঝির ছেলে।

নগরীন আলেকান্দা পুলিশ ফাঁড়ির একাধিক সদস্যরা জানিয়েছেন, করিম কুটির মজিদ গলির স্মরণিকা ভিলার নিচতলায় ভাড়া বাসায় একা বসবাস করতেন মৃত মহিউদ্দিন। স্থানীয়রা তাকে বাসার মধ্যে দুপুরের পর থেকে বিছানার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাত পর্যন্ত একই অবস্থায় পরে থাকতে দেখে ৯৯৯ কল করে বিষয়টি জানান।

খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃত অবস্থায় মহিউদ্দিনকে উদ্ধার করেন। পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, মৃতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এর আগে মৃতের স্বজনরা যেভাবে অভিযোগ দায়ের করবেন, সে অনুযায়ী তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শুক্রবার দুপুরে মৃত শিক্ষক মো. মহিউদ্দিনের বড় ভাই পিরোজপুর জিলা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দীন বলেন, ‘আমার ভাইয়ের হঠাৎ মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না। মহিউদ্দিনের মৃত্যুর খবর পেয়ে ওর স্কুলের সবাইকে জানানো সত্ত্বেও তারা কেউ আসেনি।’

মৃত মহিউদ্দিনের ছোট ভাই বরিশাল বিএম স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান প্রধান শিক্ষকের সাথে দুর্নীতিসহ নানা অনিয়ম নিয়ে তার ভাইয়ের (মহিউদ্দিন) বিবাদ চলে আসছিলো। কিছুদিন আগে স্কুলের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কাছে তার ভাই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমনকি সাংবাদিকদেরও জানিয়েছেন। এজন্য তাকে বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া কয়েক মাসে তার ভাই মহিউদ্দিনকে বহিরাগত লোক দিয়ে মারধরও করা হয়েছিল।

মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের ধারণা এ মৃত্যুর সাথে হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ করার বিষয় জড়িত রয়েছে।’

অপরদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘সাবেক প্রধান শিক্ষক ফকরুজ্জামানের নিয়মবহির্ভূত কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেন শিক্ষক মহিউদ্দিন। এরপর থেকেই তার বিরুদ্ধে অনেকেই জোটবদ্ধ হন এবং নানাভাবে হয়রানি করতে শুরু করেন। এ নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত থাকতেন। পাশাপাশি তিনি শারীরিকভাবেও বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন।’

খোকন আহম্মেদ হীরা/রাকিব

×