
ছবি: জনকণ্ঠ
””
॥ রাজধানীর মিরপুরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়া সফলভাবে আয়োজন করেছে দুইদিনব্যাপী "হোলিস্টিক প্রোটেকশন ট্রেইনিং অন সেফটি অফ জার্নালিস্টস উইথ এ ফেমিনিস্ট অ্যাপ্রোচ" শীর্ষক প্রশিক্ষণ।
১৩ ও ১৪ জুলাই, ২০২৫ (রবিবার ও সোমবার) অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণটি গ্লোবাল প্রজেক্ট "ইক্যুয়ালি সেফ: টুয়ার্ডস এ ফেমিনিস্ট এজেন্ডা টু দ্য সেফটি অফ জার্নালিস্টস (FEMSOJ 2)"-এর অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়। প্রকল্পটি দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশে পরিচালিত হচ্ছে এবং এর আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (GAC)।
প্রশিক্ষণে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মোট ১৪ জন নারী সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন, যারা প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমে কর্মরত। প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য ছিল নারী সাংবাদিকদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে বহুমাত্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। প্রশিক্ষণ কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত ছিল, শারীরিক ও আইনি সুরক্ষা, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা সম্পর্কে সচেতনতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা, মনোসামাজিক সহায়তা ও মানসিক সুস্থতা।
ঝুঁকি মূল্যায়ন বিষয়ক সেশনে অংশগ্রহণকারীরা সাংবাদিকতা পেশায় নিয়মিত যেসব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন—যেমন চাকরি নিরাপত্তাহীনতা, রাজনৈতিক চাপ, হয়রানি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ ও যৌন হয়রানি—তা খোলামেলা আলোচনা করেন।
নারী সাংবাদিকরা আরও জানান, পেশাগত কাজের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের বাইরেও তারা প্রায়ই যৌন হয়রানি, হুমকি এবং বৈষম্যের শিকার হন। তারা প্রশিক্ষণের জন্য আর্টিকেল নাইনটিনকে ধন্যবাদ জানান এবং অনুরোধ করেন যে, ভবিষ্যতে পুরুষ সহকর্মীদের জন্যও এ ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক—যাতে নিরাপত্তা, সহনশীলতা এবং লিঙ্গ সমতা একটি সমন্বিত সংস্কৃতিতে পরিণত হয়।
প্রশিক্ষণে বক্তব্য রাখেন আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার হেড অব প্রোগ্রাম, শাহনেওয়াজ পাটোয়ারী। তিনি বলেন,“নারীবাদী ও ইনটারসেকশনাল জেন্ডার দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে সাংবাদিকদের জন্য একটি সক্ষম ও নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা সময়ের দাবি। এজন্য সুরক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি, যা সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করবে।”
প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করেন, আনিসুর রহমান, ড. রুবিনা হোসেন, শাহনেওয়াজ পাটোয়ারী, আয়েশা আক্তার আফ্রি এবং সাদমান আহমেদ।
তারা নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে অগ্রাধিকার দিয়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার সামগ্রিক প্রেক্ষাপট, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো, ডিজিটাল নিরাপত্তা, মানসিক সুরক্ষা এবং ইনটারসেকশনাল জেন্ডার অ্যাপ্রোচের বাস্তব প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করেন।
আর্টিকেল নাইনটিন সংশ্লিষ্টার জানিয়েছেন, ভবিষ্যতেও সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক কাজের পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে এ ধরনের বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।
আর্টিকেল নাইনটিন একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তা নিশ্চিতে কাজ করে আসছে। সংস্থাটি ২০০৮ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় এর কার্যক্রম শুরু করে।
ছামিয়া