ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

পাবনায় বিএনপির দুই গ্রুপের গোলাগুলির ঘটনায় মূল হোতা বিএনপি নেতা মজিবর খাঁ গ্রেপ্তার

রাকিবুল হাসান, পাবনা

প্রকাশিত: ২০:৩৮, ১৫ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:৩৯, ১৫ জুলাই ২০২৫

পাবনায় বিএনপির দুই গ্রুপের গোলাগুলির ঘটনায় মূল হোতা বিএনপি নেতা মজিবর খাঁ গ্রেপ্তার

পাবনার সুজানগরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে ১৫/২০ নেতাকর্মী আহতের ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান খাঁ (৫৫) কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে সুজানগরের চরভবানীপুর এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার মজিবর চর সুজানগরের মৃত নায়েব আলীর খাঁর ছেলে। তিনি সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে পৌর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম রেজা হাবিবের অনুসারী বলে জানা গেছে।

র‌্যাব পাবনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুজানগরের পৌর এলাকার নন্দিতা সিনেমা হলের সামনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে আসামিরা গা ঢাকা দেয়। ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পলাতক রয়েছে আসামিরা। র‌্যাবের একটি চৌকস টিম সেই মামলার প্রধান আসামি মজিবর খাঁকে সোমবার দুপুরে চরভবানীপুর এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করে।

পাবনা র‌্যাবের অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি আতিকুর রহমান খান পিপিএম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমাদের বিশেষ টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে সুজানগরের সংঘর্ষের ঘটনার মামলা রয়েছে। তিনি সেই মামলার প্রধান আসামি। আমরা থানা পুলিশকে সোপর্দ করেছি। রিমান্ড নিলেও পুলিশ নিতে পারবে।

সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জুলাই সুজানগর পৌর বাজারের নন্দিতা সিনেমা হলের সামনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি সেলিম রেজা হাবিব গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফসহ ১৫/২০ নেতাকর্মী আহত হন। এদের মধ্যে শেখ আব্দুর রউফকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে গুরুতর আহত সুজানগর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফের ছেলে আদনানুর রউফ রুদ্র বাদী হয়ে সুজানগর পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান খাঁকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। মাষ্টারপাড়া এলাকার নয়ন খাঁ নামের একজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেপ্তার সুজানগর পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর খাঁয়ের নেতৃত্বে একটি চক্র তৈরি হয়েছে। অবৈধ বালু কাটা, বাজারে দোকানদার ও উপজেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে বেপরোয়া চাঁদাবাজি, স্বর্ণের দোকানে দিনেদুপুরে ডাকাতি, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ যাবতীয় অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অনেক ব্যবসায়ী এদের অত্যাচারে সুজানগর বাজারে আসেন না। চলতি বছরের (৩ মার্চ) অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করলে ইউএনওকে মারতে যান মজিবর খাঁসহ ওই চক্রটি।

এসময় সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রুমে বসে থাকা জামায়াত নেতারা বাধা দিলে অফিসের ভিতরেই জামায়াতের উপজেলা নায়েবে আমীর ও সেক্রেটারিসহ ৪ জন নেতাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়েছিল। এ ঘটনা সারাদেশে আলোচনার জন্ম দিলে নামেমাত্র কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়। জামায়াত নেতা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলেও তেমন কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে সম্প্রতি এত বড় ঘটনার জন্ম দিল এই চক্রটি। এছাড়াও বাজারের একটি স্বর্ণের দোকানে দিনেদুপুরে ডাকাতির ভিডিও ভাইরাল হলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

আফরোজা

×