ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

বাগেরহাটে আকস্মিক ঝড়ে ২০ ঘর বিধ্বস্ত, ব্যাপক ক্ষতি 

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ১৫ জুলাই ২০২৫

বাগেরহাটে আকস্মিক ঝড়ে ২০ ঘর বিধ্বস্ত, ব্যাপক ক্ষতি 

বাগেরহাটে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে আকস্মিক তীব্র ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ পড়ে এবং চালা উড়ে গিয়ে কমপক্ষে ২০ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ভেঙ্গে পড়েছে অসংখ্য গাছ-পালা। সবজি ক্ষেত ও বীজতলাসহ পানবরজের মারত্মক ক্ষতি হয়েছে। মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ বিষ্ণুপুর, গোটাপাড়া, বারুইপাড়া, যাত্রাপুর এলাকায় কয়েকটি গ্রাম গাছ পড়ার কারনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন। তবে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

বাগেরহাট সদরের বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাকিম সেখ বলেন, ‘দুপুরের দিকে আকস্মিক তীব্র এ্যালোমেলো বাতাসের সাথে ঝড় শুরু হয়। প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী এ তীব্রঝড়ের সময় অসংখ্য গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে। ঘরের চালা উড়ে যায়। মূলঘর গ্রামের খলিল পাইকসহ কমপক্ষে ৫ টি বাড়ির ওপর গাছ পড়ে ঘর ভেঙ্গে যায়। তবে ঘরে থাকা পারিবারের সদস্যরা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। ঝড়ে তার (আব্দুল হাকিম) নিজের এবং একলাস সেখ, একরাম সেখ, জুয়েল সেখসহ অন্তত ২০ টি বাড়ির টিনের চাল উড়ে যায়। ঘরের সব মালামাল ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।’

একই এলাকার কলেজ ছাত্রী সাফিয়া সাবরিনা ও গোটাপাড়া এলাকার ঘের মালিক মেহেদী মল্লিক বাচ্চু জানান, গত এক সপ্তাহের অতি বৃষ্টির পর মঙ্গলবার সকালে কিছুটা রোদ ওঠে। কিন্তু দুপুরের দিকে হটাৎ তীব্র ঝড় শুরু হয়। এসময় ঘরের অসংখ্য ছোটবড় গাছ ভেঙ্গে পড়ে। ঘরের ওপর গাছ পড়ে ও চালা উড়ে মারত্মক ক্ষতি হয়। একইসাথে মরিচ, লাউ, কলা, পেঁপে, পানবরজসহ বহু সবজি ক্ষেত মাটিতে পড়ে যায়। গাছ পড়ে অনেক সড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্ন হয়।

যাত্রপুর ও বারুইপাড়া এলাকার একাধিক কৃষক অনুরূপ ক্ষয়ক্ষতি কথা উল্লেখ করে বলেন, গত ৮/৯ দিনের লাগাতার বৃষ্টির পানিতে বীজতলা, সবজি ক্ষেত তলিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক জায়গায় ক্ষেত ও বীজতলা পঁচে গেছে। এরওপর আজ দুপুরের আকস্মিক ঝড়ে আরেক দফা ক্ষতি হল। এসময় নদ-নদী-খালে অতি জোয়ারের পানিতে পথ-ঘাট-মাঠ সব তলিয়ে যায়। অসংখ্য মৎস্য ঘের ও পুকুর প্লাবিত হয়ে মাছ ভেসে গেছে। এতে খুব ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোতাহার হোসেন বলেন, টানা বৃষ্টির সাথে আকস্মিক ঝড়ে কয়েকটি গ্রামের সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারনে নিম্নাঞ্চলের আমনের বীজতলা ও শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের কাজ চলছে।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, এর আগে টানা বৃষ্টিতে জেলার ৯১৫টি চিংড়ি ঘের, ১৭৭টি পুকুর প্লাবিত  হয়ে অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবারের ঝড়ে ক্ষতির পরিমান তাৎক্ষণিক নির্ধারণ করা যায়নি।

 

রাজু

×