
ছবি: জনকণ্ঠ
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্ব থেকেই ইসলামপুরের অর্ধ লক্ষাধিক চরবসতি মানুষ যমুনার ভয়াবহ ভাঙ্গা গড়ার খেলা থেকে বাঁচতে চায়। তাদের দাবী ইসলামপুরের শিংভাঙ্গা থেকে প্রজাপতি পর্যন্ত এলাকায় ব্রীজ কাম রাস্তা এবং প্রজাপতি থেকে মন্ডলপাড়া পর্যন্ত যমুনার বাম তীর সংরক্ষণ ও মন্ডলপাড়া থেকে কটাপুর হয়ে উলিয়া বাজার পর্যন্ত এলাকায় ব্রীজ কাম রাস্তা নির্মাণ করতে হবে।
এই উন্নয়নগুলো হলে ইসলামপুরের বেলগাছা, সাপধরী, চিনাডুলি ও নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন সমূহের অন্তত: ৩০টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের বসত বাড়ী ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি যমুনার পেট থেকে উদ্ধার হয়ে উপজেলা শহরের মূল ভূখন্ডের সাথে একাকার হয়ে যাবে। সেই সাথে যমুনা চরের এই বিশাল অঞ্চলটি যমুনার পেট থেকে উদ্ধার করতে পারলে চরের এই অঞ্চলটিই একদিন হয়ে উঠবে দেশের একটি নতুন দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্রে।
সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, ইসলামপুরের সাপধরী, চিনাডুলি, বেলগাছা ও নোয়াপাড়া ইউনিয়ন সমূহের ৩০ টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ যমুনার তিনটি ছোট ছোট শাখা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গাগড়ার খেলায় অতিষ্ট। নদীর একুল ভাঙ্গে তো ওকুল গড়ে। এ ভাঙ্গা গড়ার সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেকেই প্রতি বছরই হারায় বসতভিটা ও ফসলি জমি।
তাদের আবারো নতুন করে গড়তে হয় বসত ভিটা ও অত্যান্ত কষ্ট করে চাষ করতে চরের উঁচু নিচু নতুন ভুমি। এসব চরাঞ্চল বাসীর দাবী গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি এবং জামালপুরের কুলকান্দি ও গুঠাইল এলাকার মতো নদীর তীরে পাইলিং, উঁচু বাঁধ, রাস্তা ও ব্রীজ নির্মাণ করেই তাদের বসত ভিটা ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি যমুনার পেট থেকে উদ্ধার করা সম্ভব।
স্থানীয় অভিজ্ঞজনদের ধারণা, ইসলামপুরের শিংভাঙ্গা থেকে যমুনার একটি শাখা নদীর উপর তিনশ মিটার দীর্ঘ একটি ব্রীজ এবং ওই ব্রীজ থেকে বালিভর্তী জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক সেটিং করে প্রজাপতি পর্যন্ত একটি উঁচু বাঁধ কাম রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। এরপর প্রজাপতি থেকে বিশরশি হয়ে মন্ডল পাড়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় বালি ভর্তী জিও ব্যাগ ডাম্পিং ও সিসি ব্লক সেটিং করে যমুনার বাম তীর সংরক্ষন করতে হবে। এছাড়াও উলিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে তিনশ মিটার দীর্ঘ একটি ব্রীজ এবং মন্ডলপাড়া বাজারের পূর্ব পাশে দুইশ মিটার দীর্ঘ অপর একটি ব্রীজ ও উভয় ব্রীজের সাথে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে পারলে ইসলামপুরের বেলগাছা, চিনাডুলি, সাপধরী ও নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন সমুহের অন্তত: ৩০টি গ্রাম যমুনার পেট থেকে একেবারেই উদ্ধার হয়ে যাবে।
সেই সাথে যমুনা নদীর গতিপথও তার পুরনো মূল স্রোত ধারা দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকবে। সেই সাথে ইসলামপুরের অর্ধ লক্ষাধিক চরবসতি মানুষ যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গা গড়ার খেলা থেকে মুক্তি পাবে। তখন অনেকেই এখানে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং হ্যালি প্যাড স্থাপনের দাবীও করবেন ইনশা আল্লাহ।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব এএসএম আব্দুল হালিম জানান, ইসলামপুরের সাপধরী,চিনাডুলি, বেলগাছা ও নোয়াপাড়া ইউনিয়ন সমূহের নদী ভাঙ্গন এলাকা সমূহ তিনি পরিদর্শন করেছেন। চর বসতি অসহায় মানুষগুলোকে যমুনার ভয়াবহ ভাঙ্গা গড়ার কবল থেকে রক্ষার্থে একটি টেকসই উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই লক্ষ্য সামনে রেখেই তিনি দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টা করছেন এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানিয়ে আসছেন।
শহীদ