
মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গার বিক্ষোভ-সমাবেশে বক্তারা, শকুনের দল আবার ঝাঁপিয়ে পড়েছে বাংলাদেশের স্বপ্নের ওপর। ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ড এবং দেশব্যাপী চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ -সমাবেশ করেছে চুয়াডাঙ্গার শিক্ষার্থীরা। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে বিপ্লবী ছাত্র-সমাজের ব্যানারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল হয়ে ওই এলাকা।
সমাবেশে ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, ‘চাঁদা লাগলে চাঁদা দেবো, আমার ভাইকে ফিরিয়ে দে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, চাঁদাবাজদের কবর দে’, ‘চাঁদা তোলো পল্টনে, চাঁদা যায় লন্ডনে’, ‘ওদের আবার অনেক গুণ, ১১ মাসে দেড়শ খুন’ এসব ঝাঁঝালো স্লোগানে মুখরিত হয় প্রতিবাদস্থল।
বক্তারা বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছিলাম। কিন্তু সেই স্বপ্নে ছোবল দিয়েছে একটি শকুনের দল, যারা ফের খামচে ধরেছে বাংলাদেশের পতাকা। তারা মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলেন, যেভাবে পাথর দিয়ে পিটিয়ে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যা করা হয়েছে, তা শুধু তার বুকে নয়, পুরো ছাত্রসমাজের বুকেও রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে। খুনির কোনো দলীয় পরিচয় থাকতে পারে না। খুনি মানেই খুনি।
বক্তারা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, যদি কোনো রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় কেউ খুন, ধর্ষণ, গুম করে, আর পরে সেই দল শুধু বহিষ্কার করে দায় এড়িয়ে যেতে চায়, তা মেনে নেবে না বাংলাদেশের মানুষ। যারা রাজনীতির আড়ালে সন্ত্রাস করছে, তাদের দায় সংশ্লিষ্ট দলকেই নিতে হবে। বক্তারা সরকারের উদ্দেশে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডগুলোর দ্রুত বিচার করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দুই মাসের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অভিযুক্তদের ফাঁসিতে ঝুলাতে হবে।
তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমেছে, বিচার না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না। গণজোয়ার থামানো যাবে না। জনগণের আবেগ নিয়ে খেলা করবেন না। বক্তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি লন্ডন থেকে রাজনীতি চালাচ্ছেন অথচ মাঠে নেমে জনগণের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না। যদি রাজনীতি না করেন, তা স্পষ্ট করে জানান। মবের নামে যে রাজনীতি করছেন তা শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শ নয়। জনগণের ওপর এই ফ্যাসিস্ট রাজনীতি চাপিয়ে দেয়া যাবে না।
তারা বলেন, বাংলাদেশে থাকতে হলে, রাজনীতি করতে হলে জিয়াউর রহমানের মতো গণমুখী রাজনীতি করতে হবে। ফাঁকা বুলি আর লন্ডন থেকে নির্দেশনা পাঠিয়ে নয়— মাঠে নেমে, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলে দেখাতে হবে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক জেলা সদস্য সচিব সাফফাতুল ইসলাম, ছাত্র নেতা সাব্বির হোসেন ও তাসলিম আল মাহমুদ।
উপস্থিত ছিলেন ছাত্র নেতা সাইফুল্লাহ সাদিক সৌরভ, মুশফিকুর রহমান, ফাহিম উদ্দীন মভিন, মাহাবুব ইসলাম আকাশ, আব্দুল্লাহ আল কাফি, ইব্রাহিম মাসুম, নাহিদ জাভেদ, ইউসুফ আল সাফিন, সালমান ফারসি, মেজবাউর রহমান রনক, হিমেল, তৌফিক আহমেদ, সোয়াদ, হাসনা জাহান খুশবু, আনিতা, তাসনিয়া আফসিন, নুসরাত জাহান মৌলি, আঞ্জুম হাবিবা প্রমুখ।
আঁখি