
জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেছেন, ‘২৪-এর অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা রাজপথে নেমেছিলাম, সেই আকাঙ্ক্ষা আজও পূরণ হয়নি। তাই রাজপথ ছাড়ার সময় এখনও আসেনি। চাঁদাবাজদের উৎপাত বন্ধ হয়নি; বরং খুনখারাপি বেড়েছে। পাথর দিয়ে থেঁতলে মারার মতো আইয়ামে জাহেলিয়ার যুগ ফিরে এসেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে। আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। কেউ কোনো অপকর্মে জড়িত হলে তাকে প্রতিরোধ করে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। যদি আমরা ২৪-এর মতো আবারও রুখে দাঁড়াই, তবে গড়ে উঠবে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ।’
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে জাতীয় নাগরিক পার্টির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ফয়লা বাজারে এক বিশাল পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব শেখ আখতার হোসেন, সিনিয়র মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সদস্য সচিব শেখ আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে হাসিনা পালিয়েছে, কিন্তু তার সিস্টেম এখনও রয়ে গেছে। ঢাকায় চাঁদার জন্য একজনকে পাথর দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রামপালেও ঘের দখল নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। যারা চাঁদাবাজি, লুটপাট আর কমিশনের রাজনীতি করতে চায়, বাংলাদেশের মানুষ তাদেরও বিদায় করবে। রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে মানুষকে জলবায়ু সংকটে ফেলা হয়েছে। মোংলা বন্দর নিয়েও চলছে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র।’
তিনি আরও বলেন, ‘গুম-খুন আর অপকর্ম বন্ধে সব ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন। একটি দল মনে করে, শুধু নির্বাচন হলেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। হাসিনাও তাই মনে করতেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কার না করে শুধু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র সম্ভব নয়। আগে সংস্কার, তারপর নির্বাচন।’
সিনিয়র মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘এসি রুমে বসে তারা ভাবে বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার বোঝে না। আমরা তাদের হুঁশিয়ারি দিতে চাই, রাজপথে আমাদের লড়াই শুরু হয়ে গেছে। আমরা নতুন খেলায় নেমেছি। যারা পুরনো বন্দোবস্তে ফিরতে চায়, তাদের লাল কার্ড দেখাতে হবে।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কেউ কেউ এনসিপিকে নির্বাচনবিরোধী দল হিসেবে ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা নির্বাচন চাই, তবে বিচার-সংস্কারসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দাবির প্যাকেজ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন নয়। প্রয়োজনে আরেকবার গণঅভ্যুত্থান হবে।’
ফয়লার পথসভা শেষে এনসিপি নেতৃবৃন্দ বাগেরহাট সদর উপজেলার রেলরোড এলাকায় আরেকটি পথসভায় যোগ দেন।
মিমিয়া