
সড়কে ময়লার ভাগাড়
মহাসড়কের পাশে ময়লার স্তূপ যেন একেকটি টিলায় রূপ নিচ্ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালের বর্জ্যসহ শহরের নতুন নতুন আবর্জনা সেখানে যুক্ত হচ্ছে। এতে করে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের নতুন জেলখানা মোড় সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে একটি লেন দখল করে গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগাড়। এ পরিস্থিতিতে ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী অনেকে নাক-মুখ বন্ধ করেও দুর্গন্ধ সহ্য করতে পারেন না। এত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে যে, গাড়িতে বসে থেকেও চলাচলকারী সাধারণ যাত্রী, পথচারী এবং পরিবহন শ্রমিকদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। জানা যায়, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল হাসপাতালের বর্জ্যসহ কিশোরগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার বর্জ্যসহ নতুন নতুন ময়লা-আবর্জনা ফেলে ইতোমধ্যে মহাসড়কের এক লেন পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে পথচারীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে এক প্রকার বাধ্য হয়েই এ পথ দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী, যাত্রী ও চালকরা। আশপাশে বসবাসকারী মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আয়নাল মিয়া বলেন, কেউ কয়েকদিন আমাদের এলাকায় থাকলে বুঝতে পারবেন কীভাবে আমরা বেঁচে আছি! আমাদের বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। হেঁটে চলাচল করলে দুর্গন্ধে বমি আসে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা খুবই কষ্টে আছেন। দুর্গন্ধে পেটে খাবার ঢুকতে চায় না। এখন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে, এলাকা ছাড়তে হবে। এ ছাড়া কোনো বিকল্প দেখছি না। বাসচালক আরিফুল ইসলাম বলেন, ময়লায় লেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আস্তে আস্তে এই রাস্তাটা যেতে হয়। আর এতে দুর্গন্ধে যাত্রীদের অনেক সমস্যা হয়। এটা বহুদিনের সমস্যা। কয়েকটি পয়েন্টে এমন বড় বড় ভাগাড় হয়েছে। বাসে থাকা যাত্রী মুজিবুর রহমান বলেন, প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করে। অথচ দিনের পর দিন ময়লার স্তূপ বাড়ছে, কিন্তু দেখার যেন কেউ নেই।
এলাকাবাসীর দাবি, এ সমস্যার দ্রুত ও স্থায়ী সমাধান না হলে মহাসড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের অবস্থা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। তারা দ্রুত ময়লা অপসারণ এবং বিকল্প ডাম্পিং স্পট নির্ধারণে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করছেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সাইফুল ইসলাম জুয়েল গণমাধ্যমে বলেন, খোলা স্থানে এভাবে ময়লা ফেলার কারণে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। আশপাশের বাতাস বিষাক্ত হয়ে উঠছে, যার প্রভাব পড়ছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের স্বাস্থ্যে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা দ্রুত কার্যকর ভূমিকা রাখবেন বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ সদরের ইউএনও এরশাদ মিয়া গণমাধ্যমে বলেন, জনভোগান্তির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
প্যানেল