ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে হাজারো পরিবার, চান স্থায়ী সমাধান

জীতেন বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৯:১৪, ৯ জুলাই ২০২৫

খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে হাজারো পরিবার, চান স্থায়ী সমাধান

টানা বর্ষণের ফলে আতঙ্কে আছেন খাগড়াছড়ির পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীরা। ঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে বসবাস করতে হয় তাদের। স্থানীয়রা বলছেন, কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই তাই বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন তারা। খাগড়াছড়ি সদরে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার পরিবারসহ পুরো জেলায় প্রায় ৩৫-৩৬ হাজার পরিবার কষ্ট আর ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে বসবাস করেন। বর্ষা এলেই তারা থাকেন আতঙ্কে, কখন যে ঘটে পাহাড় ধসের ঘটনা। টানা এই বৃষ্টিতে প্রাণ হানির মতো না ঘটলেও ছোট বড় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেকের বাড়ি-ঘর। 

টানা বর্ষণের কারণে পাহাড় ধসের শঙ্কা ও ঝুঁকিতে বসবাস করতে হয় তাদের। এদিকে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের আশ্রয় কেন্দ্রে বা নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার মাইকিং করে পরামর্শ দিয়েছে পৌরসভা ও জেলা প্রশাসন । এছাড়া প্রস্তুত করা হয়েছে ১২৪ টি আশ্রয় কেন্দ্র। বিশেষ করে জেলা শহরের শালবন-খাগড়াপুর, কুমিল্লা টিলা, সবুজবাগ, ঠাকুরছড়া এ সব এলাকায়। এছাড়াও জেলার রামগড়, লক্ষীছড়ি, দীঘিনালাসহ বিভিন্ন উপজেলায়ও পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করেন হাজারো পরিবার।


খাগড়াছড়ি সদরের শাল বাগান গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় মসজিদের ঈমাম মাওলানা আবুল কাশেম ও নুর নাহার বেগম, রামগড় কালাডেবা গ্রামের বাসিন্দা মো, সেলিম ও লক্ষীছড়ি জুর্গাছড়ির রামেন্দ্র চাকমা বলেন, বর্ষা এলে তারা আতঙ্কে থাকেন, কখন যে পাহাঢ় ধসের ঘটনা ঘটে কিন্তু যাওয়ার কোথাও নেই তাই বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন তারা। তাদের দবি পাহাড় যাতে না ভাঙ্গে সরকার ধারক দেয়াল বা অন্য কোন ব্যবস্থা করে দিলে তারা নিরাপদে থাকতে পারবেন।


তারা আরো জানান, বর্ষা এলে টানা বর্ষণের সময় প্রশাসন তাদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খুললেও তারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চান না, কারণ আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে তাদের গবাদি পশু ও বাসা-বাড়ির অন্যান্য জিনিস-পত্র গুলো নেয়া সম্ভব নয়। অনেক সময় তারা আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে অনেকেই তাদের ঘর-বাড়ির জিনিস পত্র চুরি করে নিয়ে যায়। যার কারনে তারা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চান না। তাই তারা এর স্থায়ী সমাধান দাবি করেন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরতদের সর্তক থাকার পাশাপাশি ভারী বর্ষণের সময় অন্যত্র সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে পৌরসভা ও জেলা প্রশাসন। তাদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস ও দিয়েছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল খন্ডকার ইসলাম বলেছেন, টানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয় কেন্দ্রে মাইকিং করে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তাদের পরিবেশন করা হয়েছে। আশ্রিতদের যদি আরো খাবার লাগলে তারা ব্যবস্থা করবেন। খাগড়াছড়ি জেলায় ১২৪ টি করে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যারা আ্রশয় কেন্দ্রে যাবেন তাদের জন্য থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা করা হয়েছে। খাগড়াছড়িতে পৌর এলাকায় ৩০ টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ৩ হাজার ৫ শত পরিবার সহ পুরো জেলায় ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় ৩৫-৬৬ হাজার পরিবার ।

অপরদিকে স্থানীয় ও সচেতন মহলের দাবী সরকার যেন ঝুকিতে পাহাড়ে বসবাসকারীদের যেন স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করে দিয়ে তাদের সুরক্ষা করেন। যেন প্রতি বর্ষায় পাহাড় ধসে কোন প্রাণ হানি না ঘটে।

 
 
 

রিফাত

×