
ছবি- দৈনিক জনকণ্ঠ
ভোলায় টানা সাতদিন ধরে বিরামহীন বর্ষণে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। শহর থেকে গ্রাম—সবখানেই পানি ও কাদায় অচল হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার গলিগুলো এখন পানিতে টইটুম্বুর। থমকে গেছে নাগরিক জীবনের স্বাভাবিক চলাফেরা।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে অভ্যন্তরীণ সকল নৌরুটে তিন দিন ধরে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে৷ এতে ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভোলা-বরিশাল, ভোলা-চরফ্যাশনসহ বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন। বিশেষ করে রোগী পরিবহন ও জরুরি কাজে আসা-যাওয়া যাত্রীরা বেশি বিপাকে পড়েছেন।
ভোলা শহরের খেয়াঘাট এলাকা, দরগারোড, গাজীপুর রোড, আবহাওয়া অফিস রোড, বরিশালের দালান থেকে মাদ্রাসা বাজার রোড, দক্ষিণ চরনোয়াবাদসহ বেশ কয়েকটি সড়ক পানি- কাঁদাসহ চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে৷
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বলেন, গত ৩ দিন ধরে দোকান খোলা যাচ্ছে না। চারপাশে পানি, কোনো ক্রেতাও নেই। বাচ্চাদের স্কুলও যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
রিকশাচালক জামাল মিয়া জানান, রিকশা নিয়ে বের হলেও যাত্রী নাই, রাস্তায় পানি আর কাদা। এখন সংসার চালানোই কঠিন হয়ে গেছে।
সাগরে নিম্নচাপের কারণে বিআইডব্লিউটিএ-এর নির্দেশে ভোলার অভ্যন্তরীণ সব নৌরুটে নৌযান চলাচল তিনদিন বন্ধ রয়েছে। এতে দূরপাল্লার যাত্রীরা আটকে পড়েন ভোলা ও আশপাশের ঘাটগুলোতে। অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার বা মাছ ধরার নৌকায় যাতায়াতের চেষ্টা করেছেন।
এদিকে বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ ভোলার স্কুল ও মাদরাসায় উপস্থিতি কমে গেছে। অনেক বে-সরকারি শিক্ষা- প্রতিষ্ঠান সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে। শহরের বাজারগুলোতেও দেখা গেছে ক্রেতা-দর্শনার্থীর অভাব। ব্যবসায়ীরা জানান, বিক্রি আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
ভোলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মনিরুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। নিম্নচাপ আরও ঘনীভূত হতে পারে। এজন্য সাগরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আগামী ১২ই জুলাই পযর্ন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি৷
ভোলা বিআইডব্লিউটিএ'র সহকারী পরিচালক রিয়াজ হোসেন জনকণ্ঠকে জানান, সাগরে নিম্নচাপের কারণে ভোলা- লক্ষীপুর, ভোলা -বরিশালসহ স্থানীয় নৌযোগাযোগ গত ৩দিন ধরে বন্ধ হয়েছে৷ তিনি আরো জানান, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ভোলার অভ্যন্তরীণ এ সকল নৌ-যোগাযোগ বন্ধ থাকবে।
নোভা