ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

শেরপুরে অনুমোদনহীন বেকারির ছড়াছড়ি: অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ঝুঁকিতে জনস্বাস্

মারুফুর রহমান, শেরপুর:

প্রকাশিত: ১০:০২, ৮ জুলাই ২০২৫

শেরপুরে অনুমোদনহীন বেকারির ছড়াছড়ি: অস্বাস্থ্যকর খাদ্য ঝুঁকিতে জনস্বাস্

ছবি: জনকণ্ঠ

শেরপুরের আনাচে-কানাচে অনুমোদনহীন বেকারির বিস্তার জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব বেকারিতে নেই কোনো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, শিশু শ্রমিকের ব্যবহার, নিম্নমানের উপকরণ ও ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রণে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে কেক, পাউরুটি, টোস্ট বিস্কুটসহ নানা খাদ্যপণ্য। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে শিশু-কিশোরসহ সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।

শেরপুর পৌর শহরের মধ্য নওহাটার রুহানি কেক গ্যালারী অ্যান্ড ফুড নামের একটি বেকারিতে গিয়ে দেখা যায়, স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে কেক, চানাচুর, বিস্কুটসহ নানা পণ্য তৈরি হচ্ছে খালি হাতে, খোলা জায়গায়। সেখানে একজন শিশু শ্রমিককেও কাজে লাগানো হয়েছে। মালিক দেলোয়ার হোসেন স্বীকার করেছেন যে, তার কাছে কেবলমাত্র পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে—স্বাস্থ্য বা পরিবেশ সনদ কিছুই নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে না পেরে বলেন, “এভাবে অনেকেই করছে।”

একই ধরনের চিত্র মোবারকপুরস্থ অভিজাত বেকারি ও বেস্ট কেক গ্যালারীতেও। মালিক সিদ্দিক এর কাছে লাইসেন্সের কথা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান,“ব্যবসা ছেড়ে দেব ভাবছি।” আর অভিজাত বেকারির মালিক রতন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এসব বেকারির পণ্য খেয়ে বাচ্চাদের পেটে সমস্যা, বমি এমনকি খাদ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিষয়টি প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে না, বরং অনেক ক্ষেত্রেই “দৃষ্টি এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে” এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর শেরপুর কার্যালয়ের পরিদর্শক সুশীল কুমার দাস বলেন,“পরিবেশ এর ছাড়পত্র ছাড়া খাদ্য উৎপাদন করা বেআইনি। আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করি। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ শেরপুরের জেলার কর্মকর্তা শাকিলুজ্জামান বলেন, “আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেইনা, কেবল মনিটরিং করি। কোথাও ত্রুটি পেলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

এদিকে সচেতন মহল মনে করছেন, শুধুমাত্র অভিযান নয়, দীর্ঘমেয়াদী নজরদারি ও জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি। প্রশাসনের একাংশের উদাসীনতায় এভাবে চলতে থাকলে শেরপুরের জনস্বাস্থ্য এক ভয়াবহ সংকটে পড়তে পারে।

শিহাব

×