
নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার ৯ বছরের মাদরাসাছাত্রী ময়না আক্তারকে চিরবিদায় জানিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের মানুষ। সোমবার (৭ জুলাই) বাদ আছর শাহবাজপুর খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত জানাজায় অশ্রুসিক্ত নয়নে অংশ নেন শত শত মানুষ। জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
ময়নার বাবা প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাক দেশে ফিরে আসার পর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা ঘিরে এলাকাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতারাও জানাজায় অংশ নেন।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, এ ধরনের নির্মম হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রকৃত হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তবে নিরপরাধ কাউকে যেন হয়রানি না করা হয়, সে দিকেও প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি আরও জানান, বিএনপি জেলা ইউনিট নিহত শিশুর পরিবারের পাশে রয়েছে এবং ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আইনি সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
ময়নার চাচা সেলিম মিয়া পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমাদের ময়নাকে যারা এভাবে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অন্যথায় জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হব।
জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন —সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন মাস্টার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, খেলাফত মজলিশ কর্তৃক নির্বাচিত সরাইল আসনের প্রার্থী মাওলানা মঈনুল ইসলাম খন্দকার ও হেফাজতে ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মুফতি বুরহানুদ্দীন কাসেমী সহ এলাকার বিশিষ্টজন ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
এর আগে গতকাল রোববার (৬ জুলাই) সকালে শাহবাজপুর হাবলী পাড়া জামে মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ৯ বছর বয়সী শিশু ময়নার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্রী ছিল। তার বাবা বাহরাইনপ্রবাসী।
এর আগে শনিবার বিকেলে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় ময়না। খোঁজাখুঁজির পরও সন্ধান না মেলায় রাতেই সরাইল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন স্বজনরা।
এ বিষয়ে সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোরশেদুল আলম চৌধুরী জানান, “এটি একটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড। আমরা সর্বোচ্চ আইনি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, খুব দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
রাজু