ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

লক্ষ্মীপুরে ভুলুয়া ব্রিজ ঘিরে গড়ে উঠছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র

এইচ.এম আল-আমিন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ৫ জুলাই ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে ভুলুয়া ব্রিজ ঘিরে গড়ে উঠছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।

কমলনগরের চর কাদিরার ভুলুয়া নদীর উপর নির্মিত ‘ভুলুয়া ব্রিজ’ এখন জেলার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। শুধু জেলার মানুষ নয়, নোয়াখালী, ফেনী ও চাঁদপুর থেকেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করছেন ব্রিজের আশপাশের মনোরম সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবি-ভিডিও দেখে জায়গাটির প্রতি মানুষের আগ্রহ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

শনিবার (৫ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৬-৭ হাজার মানুষের ঢল নেমেছে এলাকাজুড়ে। কেউ বলছেন ‘গরিবের টাঙ্গুয়ার হাওর’  কেউবা ডাকছেন ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে।

ব্রিজের দুই পাশে বিস্তৃত সবুজ চর, বর্ষার পানিতে টইটম্বুর নদী আর নৌকা-বোটের আনাগোনায় তৈরি হয়েছে অপরূপ নৈসর্গিক পরিবেশ। নদীতে ঘুরতে নৌকা ও স্পিডবোট চলছে মাত্র ২০ থেকে ১০০ টাকায়। কেউ কেউ নদীতে সাঁতার কাটছেন, আবার অনেকে মাছ ধরছেন কিংবা খেলাধুলায় মেতে উঠছেন।

স্থানীয়রা জানায়, চর কাদিরার দুই পাড়ে আগে যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল না। বর্ষায় নদীর উপর দিয়ে যাতায়াত বন্ধ থাকত। ২০২৪ সালের ২৪ মে এলজিইডির বাস্তবায়নে ৬০ মিটার দীর্ঘ 'ভুলুয়া ব্রিজ' নির্মাণের পর যোগাযোগ সহজ হয়। এর আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খালেদ সাইফুল্লাহ ব্যক্তিগত অর্থে কাঠের সেতু তৈরি করেছিলেন, যা পরে নষ্ট হয়ে যায়।

স্থানীয় ব্লগার সোহেল তানভীর ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আফরোজ হৃদয়ের ভিডিও ও কন্টেন্ট ভাইরাল হওয়ার পর জায়গাটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পর্যটক বাড়ার পর স্থানীয় মেম্বার মহিন উদ্দিনের উদ্যোগে নিরাপত্তায় গ্রাম পুলিশের টহলও চালু হয়েছে।

ব্রিজের আশেপাশে বসেছে ভ্রাম্যমাণ দোকান। চা-বিস্কুট, খাবার, খেলনা বেচে আয় করছেন স্থানীয়রা। তবে দুপুরের পর পর্যটকের অতিরিক্ত চাপের কারণে দুই পাশে এক কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজট হয়। পাশাপাশি রাস্তার বেহাল দশা ভোগান্তি বাড়াচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি, ভুলুয়া নদী খনন করা হলে শুধু সৌন্দর্য নয়, কৃষি এবং অর্থনীতিতেও ফিরে আসবে প্রাণ।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান জানান, ভুলুয়া নদীর ১৮ কিলোমিটার খননের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে। কমলনগরের ইউএনও নদীর দুইপাশে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।

ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য ভুলুয়া ব্রিজে যেতে হলে লক্ষ্মীপুর ঝুমুর বা দক্ষিণ তেমুহনি থেকে বাস বা সিএনজি করে করইতলা নামতে হবে। সেখান থেকে রববাজার সরকারি পুকুর পাড়ে গেলেই দেখা মিলবে নতুন আকর্ষণ 'ভুলুয়া ব্রিজ'।

মিরাজ খান

×