
বিশাল কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধির ফলে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে ৪টি ইউনিট পুরোদমে চালু রয়েছে। এই ইউনিটগুলো দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১৭২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনা খরচে সর্বোচ্চ ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে। চলতি বছরের মে মাসে লেকের পানি অস্বাভাবিকভাবে শুকিয়ে যাওয়ায় পানির স্তর ৭৭ দশমিক ৬১ এমএসএল (মিন সি লেভেল) হয়েছিল। কিন্তু রুলকার্ভ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছিল। রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে অবস্থিত দেশের একমাত্র কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন তখন একেবারে তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল।
এর ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে শুধুমাত্র একটি ইউনিট দিয়ে কোনো রকমে বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছিল। তবে গত জুন মাসে লেক এলাকায় অতি বৃষ্টির কারণে লেকের পানির স্তর স্বাভাবিকের চেয়ে ১২ এমএসএল বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে গেছে। পানির ওপর নির্ভরশীল কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন যে কোনো সময় চলতি বছরের তুলনায় ভালো থাকবে বলে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে।
শনিবার বিকেলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই কেন্দ্রের সবগুলো ইউনিট একযোগে সচল থাকলে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়। বর্তমানে ৪টি ইউনিট দিয়ে ১৭২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও লেকে পানির স্তর ৯৯ এমএসএল থাকায় ১৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়েছিল। এখন পানির স্তর কমে ৯৬ এমএসএল হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কিছুটা কমে গেছে। তবে সামনে বৃষ্টিপাত হলে হ্রদের পানি বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বেড়ে যাবে। তখন ৫টি ইউনিট চালু হলে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
কাপ্তাই লেকে পানির বৃদ্ধি পাওয়ায় লেকের ওপর নির্ভরশীল মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি অনেকটা কমে গেছে। বিশেষ করে লেক-সংলগ্ন বাঘাইছড়ি, লংগদু, বিলাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি উপজেলার নৌপথের যোগাযোগ পুরোদমে চালু হয়েছে এবং লেকে নাব্যতা সংকট কেটে গেছে। একই সঙ্গে ৭২৫ বর্গ কিলোমিটার বিশাল লেকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে পর্যটকদের ভ্রমণও অনেকগুণ বেড়ে গেছে।
আফরোজা