
কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে এক বৃদ্ধার ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। আগুনে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায় ঘরটি। অগ্নিকাণ্ডের সময় ঘরের ভেতরেই ছিলেন ৬৫ বছর বয়সী সুফিয়া বেগম। তিনি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত ও চলাফেরায় অক্ষম।
প্রতিবেশীরা জানান, হঠাৎ করে সুফিয়া বেগমের চিৎকার শুনে ছুটে যান তারা। গিয়ে দেখতে পান, তার ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। স্থানীয়রা দ্রুত পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন। তবে আগুন ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে সময় লেগে যায়। পরে তারা ৯৯৯-এ ফোন করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সহায়তা চান। স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস মানাখালী ব্রিজ পর্যন্ত পৌঁছালেও দুর্গম রাস্তার কারণে ঘটনাস্থলে যেতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী আফরোজা বলেন, “চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে দেখি আগুনে পুরো ঘর পুড়ছে। আমি সাথে সাথে পানি দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু আগুন ততই বাড়ছিল। মনে হচ্ছিল দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে আগুন লাগানো হয়েছে।”
ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না, রান্নাবান্নার কাজও চলছিল না। ফলে আগুন লাগার কারণ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। বৃদ্ধা সুফিয়া বেগম অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। তিনি শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল এবং স্পষ্টভাবে কথাও বলতে পারেন না।
সুফিয়ার মেয়ে শাপলা খাতুন বলেন, “ঘটনার সময় ঘর অন্ধকার ছিল। টর্চলাইটে কাজ সেরে মা ঘুমিয়ে ছিলেন। এমন অবস্থায় আগুন লাগার কারণ আমাদের বোধগম্য নয়। মা কিভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে আসলেন, আল্লাহই জানেন।”
স্থানীয়রা জানান, দুই মাস আগে প্রতিবেশী সালাম মোল্লা ও তার পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে মারামারি হয়। সেই ঘটনায় সুফিয়া বেগমের ছেলের স্ত্রী শ্যামলীকে কোদাল দিয়ে কপালে আঘাত করলে তার ১৫-১৭টি সেলাই পড়ে। ওই মামলায় সালাম মোল্লা কিছুদিন জেল খেটে জামিনে বাড়ি ফেরেন। স্থানীয়দের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়ে থাকতে পারে।
কুষ্টিয়া সদর থানার এসআই সাইমুম হাসান বলেন, “৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি ঘরটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি, কিন্তু তিনি কিছুই বলতে পারেননি। আশপাশের লোকজনও নির্দিষ্ট করে কাউকে সন্দেহ করেননি। লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় আমরা চলে আসি।”
ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের দাবি, বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
মিমিয়া