ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

ময়লার স্তূপে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন নিজেই রোগী!

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমোহন, ভোলা

প্রকাশিত: ১৮:৪৫, ৩ জুলাই ২০২৫

ময়লার স্তূপে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন নিজেই রোগী!

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।

ভোলার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতর ও আশপাশে ময়লার স্তূপ পড়ে রয়েছে যত্রতত্র। রোগীদের বেডের আশপাশে প্রতিদিনের খাবারের উচ্ছিষ্টসহ নানা আবর্জনা দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করার করলে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। দীর্ঘ দিন ফেলে রাখা এসব আবর্জনা থেকে তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে পড়াসহ বর্তমানে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন নিজেই রোগী হিসেবে রয়েছে।  

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকা রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, এখানে রোগীর চেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা করানো জরুরি হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ১১ টায় সরজমিনে হাসপাতাল এলাকা ঘুরে ময়লার বিভিন্ন স্তূপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

হাসপাতালের নতুন ২য় তলার সিঁড়ির সামনেই, ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকাসহ সচেতনতার অভাবে সেখানে প্রতিনিয়ত খাবারের উচ্ছিষ্ট  সিঁড়ির আশেপাশে ফেলছেন রোগীর স্বজনরা। ভবনের ৩য় তলার রোগীদের প্রত্যেক বেডের নিচে ময়লার স্তূপ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেক দিন পর্যন্ত পরিষ্কার না করার কারণে ময়লার স্তূপ পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে দুর্গন্ধের সহ্য করে রোগী ও তার স্বজনরা কষ্ট করে বেডে থাকতে হচ্ছে। দীর্ঘদিনের ময়লা পরিষ্কার না করার কারণে এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ রোগী এবং তাদের স্বজনরা।

লালমোহন সদর ইউনিয়ন থেকে রোগী নিয়ে আসা মারুফ বলেন, হাসপাতালের পরিবেশ চরম অস্বাস্থ্যকর। সবদিকেই শুধু ময়লা আবর্জনার স্তূপের পচা গন্ধে এখানে থাকাই কষ্টকর হচ্ছে। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এখানে রোগীর চেয়ে হাসপাতালকে চিকিৎসা করানো জরুরি।

বদরপুর ইউনিয়ন থেকে আসা রোগীর স্বজন সাবিকুন নাহার এবং বিবি ফাতেমা বলেন, কাল রাতে হাসপাতালে আমাদের রোগী ভর্তি হয়েছে, রোগী নিয়ে বেডের পাশে এসেই দেখি  ময়লা পড়ে রয়েছে এবং সেখান থেকে  দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আমাদের রোগীকে কি চিকিৎসা করাবো আমরা নিজেরাই দুর্গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।

চরভূতা ইউনিয়নের থেকে রোগী হয়ে আসা, আবু কালাম, মোর্শেদ, সবুজ, বলেন, চারপাশে ময়লা-আবর্জনা পড়ে আছে। এখান থেকে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে জানালার পাশে বেডে থাকা রোগীরা বাইরে থেকে আসা দুর্গন্ধে অস্বস্তিতে থাকেন। সবার জন্যই এই পরিবেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৪ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মধ্যে ৩ জনই অসুস্থ, তাই একটু সমস্যা হচ্ছে, আশা করছি খুব কম সময়েই এর সমাধান হয়ে যাবে। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া আছে যে হাসপাতালের ওয়ার্ড সার্বক্ষণিক পরিষ্কার থাকবে। ভিতরে কোথাও ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থাকার কথা নয়। তারপরও যদি নির্দিষ্ট স্থানে ছাড়া কোথাও বর্জ্য পড়ে থাকে, তা মনিটরিং করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মিরাজ খান

×