
টাঙ্গাইল শহরের কান্দাপাড়া যৌনপল্লীতে শনিবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে যৌনকর্মীদের ১২টি ঘর ও ১০টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তবে কেউ হতাহত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পল্লীর এক ঘরে রান্নার সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। সে সময় অনেকেই ঘুমাচ্ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দ হওয়ার পর মুহূর্তেই আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ঘরের ভেতরে থাকা মালামাল, নগদ টাকা, সোনা-দানা, কাগজপত্র কিছুই বের করে আনা সম্ভব হয়নি।
খবর পেয়ে টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ক্ষতিগ্রস্ত যৌনকর্মীরা জানান, তারা ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। পাশের ঘরে রান্না চলছিল। হঠাৎ বিস্ফোরণ ও আগুনে কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তাদের পড়নের কাপড় ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। ঘরে থাকা টিভি, ফ্রিজ, আসবাবপত্র, অলঙ্কার ও জমির দলিল পর্যন্ত পুড়ে গেছে।
যৌনপল্লীর সংগঠন নারী মুক্তি সংঘের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারা বেগম বলেন, “আমাদের মেয়েরা এখন খোলা আকাশের নিচে। খাবার নেই, পরার কাপড় নেই, ঘুমানোর জায়গাও নেই। আমরা প্রশাসন ও সুশীল সমাজের সহানুভূতি কামনা করছি।”
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে আমি দলীয়ভাবে খোঁজ নিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জেলা প্রশাসক ও পৌর প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে সহযোগিতার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার এসএম হুমায়ুন কার্ণায়েন বলেন, “সকাল ১১টার পর আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছি। প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ২২টি ঘর এবং দোকান পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তদন্ত শেষে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।”
এদিকে আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের এলাকা থেকে শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। কেউ কেউ ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
মিমিয়া