
সংগৃহীত
একটা সময় ছিল, বৃষ্টির আগমনে মানুষ উচ্ছ্বসিত হতো। আজ সেই বৃষ্টি নামলেই বুক কাঁপে গ্রামের কৃষকের, নদীর মাঝির কিংবা মাঠে গরু চরানো কিশোরের। কারণ, আকাশে মেঘ জমার সঙ্গে সঙ্গেই নেমে আসছে মরণ-বার্তা বজ্রপাত!
চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসেই বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫০ জনের বেশি।বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল কৃষিনির্ভর দেশে এই সংখ্যাটি শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়, বরং প্রতিটি মৃত্যু একটি পরিবারের জীবন ভাঙা ইতিহাস।
কোথায় ঘটছে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত?
ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, জামালপুর, ও বরিশাল এই এলাকাগুলো বজ্রপাতে মৃত্যুর শীর্ষে।মৃত্যুর সময় অধিকাংশই ছিলেন মাঠে, খেতে, নদীতে বা খোলা জায়গায়।
মায়ের কান্নায় কাঁপল গ্রাম: “ভোরে ছেলে গরু নিয়ে মাঠে গেল। দুপুরে খবর এলো বজ্রপাতে ছেলেটা আর নাই।” এই এক বাক্যেই বোঝা যায়, বজ্রপাত কীভাবে ভেঙে দিচ্ছে হাজারো পরিবারের স্বপ্ন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় জনগণের সচেতনতার অভাবই বড় কারণ।
অনেকে বজ্রপাতের সময় মোবাইলে কথা বলেন, Facebook Live করেন, খোলা মাঠে দৌড়ান এসবই মৃত্যুকে ডেকে আনে।
করণীয় কী?
- বজ্রপাত শুরু হলে ঘরের ভিতরে চলে যান
- গাছের নিচে আশ্রয় নেবেন না
- মোবাইল, ইলেকট্রনিক ডিভাইস বন্ধ রাখুন
- খোলা জায়গা, ধাতব বস্তু, জলাশয় এড়িয়ে চলুন
- শিশু ও বয়স্কদের নিরাপদে রাখুন
কেন এই মৃত্যু ঠেকানো জরুরি?
বজ্রপাত বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, এটি ‘নীরব ঘাতক’। প্রতি বছর এমন অসংখ্য প্রাণ যায়, যেগুলো সঠিক সময় সচেতনতা থাকলে বেঁচে যেতে পারত।
বজ্রপাত আমাদের চোখে দেখা যায় না, কিন্তু তার প্রভাব চোখের জলে গলে পড়ে।একটি বাজ পড়া মানে শুধু একজনের মৃত্যু নয় একটি সংসারের ছায়া সরে যাওয়া।আকাশের রুদ্ররূপ আমরা থামাতে পারি না, কিন্তু সচেতনতা দিয়ে প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব।আজ আপনি সচেতন হলেন কাল হয়ত আপনার সেই জ্ঞানে বাঁচবে কারও জীবন।
হ্যাপী