
ছবি: জনকণ্ঠ
২০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন রোকেয়া বেগম। থাকার কোন জায়গা নেই, এলাকার মেম্বার (বাদশা) বাড়ির উঠোনে ছোট্ট একটি জায়গায় ঘর করে থাকেন তিনি। তবে দীর্ঘদিন ধরে থাকার ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করে আসছিলেন তিনি।
তার মানবেতর জীবনযাপনের কথা জানতে পেরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাথে সাথে দেড় বান্ডিল টিন এবং নগদ ৬ হাজার টাকার একটি চেক ঘর মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেন। ত্রানের টিন ও টাকা পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন রোকেয়া বেগম।
কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা রোকেয়া বেগম (৫৭)। একজন ছেলে ও ছেলের ঘরের বউ ও নাতি-নাতনি থাকলেও কোন রকম খোঁজ খবর নেন না তারা। এই বয়সে রোকেয়া বেগম মানুষের বাড়িতে কাজকর্ম করে কোনরকম জীবনযাপন করে। তবে বয়সের ভারে এখন মাঝেমাঝে কাজ করতে পারেন না। খেয়ে না খেয়ে ছোট্ট একটি ঘরে কোন রকমে থাকেন তিনি। তবে তার থাকার ঘরটির কয়েক বছর ধরে টিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার রোদ-বৃষ্টিতে অনেক কষ্ট করতে হয়। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনে পানি পড়ে সম্পূর্ণ ঘর ভিজে যায়। ঘর মেরামত করার জন্য অনেকদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় হাত পাতলেও কোন প্রকার সহযোগিতা পাননি তিনি। দৈনিক জনকণ্ঠের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি তার এই অসহায়ত্বের খবর শুনে কথা বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদা পারভীনের সঙ্গে। রোকেয়া বেগমের অসহায়ত্বের কথা শুনে তাৎক্ষণিক তার জন্য দেড় বান্ডিল টিন ও ৬ হাজার টাকার একটি চেকের ব্যবস্থা করেন।
রায়পুর এলাকার বাসিন্দা কাজলি সরকার বলেন, রোকেয়া দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করছেন। এর আগে বিভিন্ন মানুষের বাসায় কাজ করে চলতেন। তবে এখন বয়সটা একটু বেশি হওয়ায় মাঝেমাঝে কাজ করতে পারেন না। এখন খাবার-দাবারের অনেক কষ্ট হয়। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে তার থাকার ঘরটির অবস্থা অনেক খারাপ। চালের টিন ফুটো হয়ে গেছে। বর্ষায় অনেক কষ্ট করে থাকেন।
রোকেয়া বেগম বলেন, 'অনেকদিন বিভিন্নখানে অনেক ছোটাছুটি করেছি। মেম্বার, চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি কোন সহায়তা পাইনি। আজকে ত্রানের টিন ও টাকা পেয়ে আমার অনেক উপকার হলো।'
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঈদা পারভীন "দৈনিক জনকণ্ঠকে" বলেন, ' আমি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে, কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বৃদ্ধা মহিলা রোকেয়া বেগম অনেক মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে। ছেলে যেহেতু তার খোঁজখবর নেয় না, দেখাশোনা করে না, তাই তিনি এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত। তাই তার খবর শুনে তাকে ঘর করার জন্য টিন ও টাকার ব্যবস্থা করেছি।'
এএইচএ