
কক্সবাজারের রামুতে রহস্যময় কানা রাজার সুড়ঙ্গ নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। প্রাচীন ঐতিহ্যের রহস্যে মোড়ানো এ স্থাপনাটি স্থানীয়ভাবে ‘আধার মানিক’ নামে পরিচিত এবং এটিকে ঘিরে রয়েছে নানা জনশ্রুতি ও ইতিহাস।
রামুর এই ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গটি পাহাড়ের ভিতর প্রায় ৩৫০ ফুট বা তারও বেশি লম্বা। জনশ্রুতি রয়েছে, অতীতে মিয়ানমারের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা মাঝে মাঝে এখানে পূজা করতে আসতেন। সুড়ঙ্গের পাশেই ছিল একটি মন্দির, যেখানে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু বসবাস করতেন বলেও শোনা যায়।
রামু উপজেলা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পূর্বে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়া ঘোনা নামক সু-উচ্চ পাহাড়ের নিচে অবস্থিত এই রহস্যময় গুহা। স্থানীয়রা একে ‘আধার মানিক’ নামেও চেনেন।
এই গুহার সাথে যাঁকে যুক্ত করা হয় তিনি আরাকানের রাজা চিম্বিয়ান (চিম্মিয়া), যাঁকে ‘কানা রাজা’ বলা হয় তবে তাঁর এক চোখ অন্ধ ছিল এমন প্রমাণ মেলে না।
১৭৯৮ সালে রাজা চিম্বিয়ান আরাকানে বিদ্রোহীদের হাতে পরাজিত হয়ে কয়েক হাজার অনুসারীসহ নাফ নদী পার হয়ে কক্সবাজার জেলায় এসে আশ্রয় নেন। ‘জি হার্বার'র History of Burma বইয়ের সূত্র অনুযায়ী, এই আরাকানি রাজা ১৮১৫ সালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মারা যান। ধারণা করা হয়, তিনি এই আধার মানিক গুহাতেই আত্মগোপনে ছিলেন।
সুড়ঙ্গের প্রবেশমুখ ত্রিভুজ আকৃতির এবং এটি মাটি থেকে প্রায় ২৫ ফুট উঁচু। গুহার গভীরতা আনুমানিক ৭০ ফুট, এবং সেখানে প্রবেশ করতে হলে হামাগুড়ি দিয়ে বহু কষ্টে যেতে হয়। গুহার ভেতরে বাড়ি আকৃতির বিশাল একটি খোলা জায়গা রয়েছে বলে জানা যায়। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো কেউ গুহার সম্পূর্ণ ভিতর পর্যন্ত যেতে পারেনি।
এজন্যই প্রশ্ন রয়ে গেছে “কি আছে কানা রাজার সুড়ঙ্গের ভিতরে?”
মিমিয়া