ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সেনাবাহিনীকে কোনোভাবেই বিতর্কিত হতে দেয়া যাবে না: সালাহউদ্দিন আহমেদ

প্রকাশিত: ২২:৩৯, ২৪ মে ২০২৫

সেনাবাহিনীকে কোনোভাবেই বিতর্কিত হতে দেয়া যাবে না: সালাহউদ্দিন আহমেদ

ছ‌বি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশের সেনাবাহিনীকে কোনভাবেই বিতর্কিত করা উচিত নয়। তিনি জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, এসব বিষয়ে যেন কোনো ধরনের ‘ছেলেমানুষি’ করা না হয়।

এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিশ্বাসী। আমরা বারবার বলেছি সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করবেন না। এ দেশ জাতীয় স্বার্থে পরিচালিত হোক, এটা আমরা চাই।”

তিনি ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনা স্মরণ করে বলেন, “ওই রাতে আমি এবং মাহমুদ ভাই পিজি হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলাম। মাহমুদ ভাই টানা সাতদিন অনশন করেছিলেন। আমি বলেছিলাম, আপনি যদি মরে যান, হাসিনা খুশি হবে। অনশন ভঙ্গ করুন।” অবশেষে প্রবীণদের অনুরোধে তিনি অনশন ভঙ্গ করেন বলে জানান সালাহউদ্দিন।

তিনি বলেন, “আমি চাই, শাপলা চত্বরে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের বিচার যেন আমি জীবদ্দশায় দেখতে পারি। এত বড় হত্যাকাণ্ড হলেও আজ পর্যন্ত কোনো নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। আমরা জানতে চাই, কেন এখনও পর্যন্ত একটি পূর্ণাঙ্গ শহীদ তালিকা তৈরি করা গেল না?” এসময় তিনি আলেমদের উদ্দেশে বলেন, “অবশেষে একটি স্মৃতিসারক প্রকাশ করতে পেরেছেন, এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়, তবে এটা পূর্ণাঙ্গ হওয়া দরকার। প্রত্যেক শহীদের নাম, ছবি এবং ঠিকানা যেন সংরক্ষিত থাকে।”

শেখ হাসিনার সরকারের কঠোর সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাতের অন্ধকারে পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করে চারদিক থেকে গুলি চালিয়ে নিরীহ মাদ্রাসা ছাত্রদের হত্যা করা হয়েছে। অথচ সেই হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাসিনা সংসদে তামাশা করেন। আকাশপথে গানশিপ দিয়ে সাধারণ মানুষ, নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও এই সরকার অনুশোচনা করেনি, ক্ষমা চায়নি, বরং গণঅভ্যুত্থানকারীদের অপরাধী বানানো হচ্ছে।”

তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইলে একাধিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। বিচার দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে, কিন্তু এখন থেকেই প্রসিকিউশন, তদন্ত ও লজিস্টিক সাপোর্ট জোরদার করতে হবে। “মানবতাবিরোধী অপরাধের যেসব মামলা চলছে সেগুলোর বিচার দৃশ্যমান নয়। অন্তত কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সামনে আনা হোক,” বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, “আমরা গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেতে চাই। তাই নির্বাচন নিয়ে আমরা বারবার দাবি জানাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ আমরা চাইনি, এখনো চাই না, তবে আমরা একটি রোডম্যাপ চেয়েছিলাম। আজকে সরকারকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, এটা ঠিক নয়।”

আলেম সমাজের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আপনাদের ভেদাভেদই স্বৈরাচারীদের সুযোগ করে দিয়েছে। আপনারা এক থাকলে কেউ মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের সাহস পেত না।” তিনি ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় আলেমদের অগ্রণী ভূমিকা কামনা করেন।

বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন ঈমান-আকিদা নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করার দায়িত্ব আপনাদের।”

ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=Zb5k59DL9uE

এম.কে.

×