
ছবি: সংগৃহীত
তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এর থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় বেড়েছে রসালো তালের শাঁসের চাহিদা। রোদের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তালের শাঁসের কদর। গ্রীষ্মের অসহনীয় গরমে অস্থির পথচারীদের এক মুহূর্তের জন্য হলেও তৃষ্ণায় স্বস্তি দিচ্ছে তালের শাঁস। কারণ এই তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানি শূন্যতা দূর করে, চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ার পাশাপাশি মুখের রুচি বৃদ্ধি করে। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সিসহ নানা ধরনের পুষ্টি চাহিদাও মিটছে তালের শাঁসে।
গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারের ব্যস্ত সড়কের পাশে তালের শাঁস বিক্রি করতে দেখা গেছে। ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছেন তালের শাঁস। আবার অনেকেই বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামীণ অর্থনীতিতেও মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস অবদান রাখছে। বর্তমানে তিন শাঁসের প্রতি পিস তাল ২০ থেকে ৩০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে।
ভোলা শহরের নতুন বাজার তালের শাঁস বিক্রেতা মো. জামাল হোসেন জানান, এই গরমে তালের শাঁসের বেশ কদর রয়েছে। গত দুই বছর ধরে মৌসুমে বিভিন্ন এলাকা থেকে তাল কিনে আনি। প্রতি পিস তাল ৫ টাকায় কিনি। বাজারে এনে বিক্রি করা পর্যন্ত একেকটি তালের পেছনে খরচ হয় ১০ টাকার মতো। তবে দুই বা তিন শাঁসের প্রতি পিস তাল ২০ থেকে ৩০ টাকা ধরে বিক্রি করি। প্রতিদিন বেলা ১১ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত বিক্রি করি এই তালের শাঁস। এভাবে আরো এক মাসের মতো এই তালের শাঁস বিক্রি করতে পারবো।
ক্রেতা মোহম্মদ মিজান বলেন, এই তালের শাঁস মৌসুমি একটি ফল। গরমের সময় তালের শাঁস খেলে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়। যার জন্য নিজে এবং পরিবারের সদস্যরা মিলে খেতে তিন শাঁসের মোট ৬ টি তাল কিনেছি। প্রতি পিস কিনতে হয়েছে ২০ টাকা ধরে।
মোহাম্মদ হাসান নামে আরেক ক্রেতা জানান, অনেক গরম। কোনোভাবেই কমছে না এই গরমের তীব্রতা। তাই কিছুটা স্বস্তি পেতে ২০ টাকা দিয়ে তিন শাঁসের একটি তাল কিনেছি। রসালো এই ফল খেলে গরমে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাই।
ভোলা সদর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ জাভেদ ইমরান বলেন, তালের শাঁসে প্রতি ১০০ গ্রামে পুষ্টিমান শক্তি রয়েছে ৪৩ থেকে ৫৫ ক্যালোরি, কার্বোহাইড্রেট প্রায় ১০ থেকে ১২ গ্রাম, গ্লুকোজ ও সুক্রোজ রয়েছে ৮ থেকে ১০ গ্রাম, প্রোটিন রয়েছে ০.৮ থেকে ১.৫ গ্রাম, চর্বি রয়েছে প্রায় ০.১ গ্রাম যা খুবই নগন্য, আঁশ রয়েছে ১ থেকে ১.৫ গ্রাম ও পানি রয়েছে ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ৷ এছাড়াও তালের শাঁসে দেহ শীতল রাখে ও হাইড্রেশন বজায় রাখে, তালের শাঁস প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা ও আর্দ্রতা সমৃদ্ধ, যা গ্রীষ্মকালে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক।
এটি ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এবং তালের শাঁসে প্রাকৃতিক চিনি ও খনিজ পদার্থ থাকায় শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদান করে এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখাসহ তালের শাঁসে স্বাস্থ্য উপকারী অনেক উপদান রয়েছে ৷
আলীম