
বাকেরগঞ্জ গারুড়িয়া ইউনিয়নের ডিঙ্গারহাট খালের উপর নির্মিত ভাঙ্গা সেতু। ছবি : জনকণ্ঠ
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার গারুড়িয়া ইউনিয়নের ডিঙ্গারহাট খালের উপর নির্মিত আয়রন সেতু এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
জনগণের যোগাযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে নির্মিত সেতু আজ পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা, চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি এখনো পড়েনি সেতুটির জরাজীর্ণ অবস্থার দিকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গারুড়িয়া ডিঙ্গেরহাট খালের অবস্থিত সেতুটি প্রায় পাঁচ বছর ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুটি গারুড়িয়া ইউনিয়ন হয়ে কলসকাঠি ইউনিয়নের সাথে সংযোগ হয়েছে। সেতুর বিভিন্ন স্থানে সিমেন্টে ঢালাই উঠে গিয়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে, নিরাপত্তা রেলিং গুলো পাঁচ বছর আগেই ভেঙে পড়েছে। সেতুটিতে এখন মানুষ চলাচল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় সেতুটি ধ্বসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা আশঙ্কা রয়েছে।
এই সেতুটিতে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন এমন একজন ভুক্তভোগী বলেন, প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করি। সেতুটি দিয়ে অনেকেই পড়ে গিয়ে হাত পা ভেঙেছে। এ বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত তারা নেয়নি।
অপরদিকে, শিক্ষার্থী, রোগী, কর্মজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সেতুর দুরবস্থার কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর আলো না থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা আরও বেড়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, আমরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। দ্রুত সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। তবে কবে নাগাদ সংস্কার কাজ শুরু হবে তা স্পষ্ট নয়। স্থানীয়দের দাবি, বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
কলসকাঠির বাসিন্দা মাসুদ সিকদার বলেন, ডিঙ্গারহাট গ্রাম সহ কলসকাঠী ইউনিয়নের বাগদিয়া গ্রামের হাজারো মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করে এই সেতু পার হয়ে। সেতুটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় কলসকাঠি বন্দরের ব্যবসায়ীরাও দুর্ভোগে পরেছেন। কলসকাঠী সপ্তাহে দুই দিন হাট বসে। তখন বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে হাজার মানুষ এই সেতু পারাপার হয় সাপ্তাহিক হাটে আসেন। চরম দুর্ভোগে পড়ে এই অঞ্চলের কৃষকেরা। কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে নিয়ে আসতে কোনো প্রকার পরিবহন সেতু পার হতে পারে না। মাথায় নিয়ে বহন করতে হয় ধান চালসহ গবাদি পশু ও হাঁস মুরগি। সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুটি পুনঃনির্মাণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, নড়বড়ে ও ভেঙে যাওয়া সেতুর সিমেন্টের ঢালাই দেয়া স্লিপারের বেশির ভাগই ভেঙ্গে পড়েছে। ক্রস এ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা সিমেন্টের ঢালাই দেয়া স্লিপারের ওপর কাঠের মাচা তৈরি করে বেঁধে দিয়েছে। সেতুর বিভিন্ন অংশের স্লিপার ভেঙ্গে গিয়ে ফাঁকা হয়ে গেছে। সেতুর ক্রস এ্যাঙ্গেল গুলো মরিচা ধরে বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে গেছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী হাসনাইন আহমেদ জানান, সেতুটি নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত নির্মাণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আসিফ