
ছবি: জনকণ্ঠ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘বট বাহিনী’ অভিহিত করে পেটানোর পরিকল্পনার অভিযোগ এসেছে রাবি শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। ‘রাবি ছাত্রদল’ নামক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মেসেজের স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী ‘বট বাহিনীর ছেলেগুলো’ বলে পেটানোর বিষয়ে আলোচনা করছেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
স্ক্রিনশটে কথোপকথনকারী ব্যক্তিরা হলেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. তুষার শেখ, বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব ও কর্মী হাসিবুল ইসলাম হাসিব।
স্ক্রিনশটে হাসিব লিখেছেন, ‘আগামীকাল ক্যাম্পাসে আসেন এই বট বাহিনীর ছেলেগুলাকে চিহ্নিত করে দিন। এক সালাকেও ছাড় হবেনা। ক্যাম্পাসের বাইরে বের হবেনা? সবগুলারে একটা একটা করে ধরে ছিড়ে ফেলে দিবো।’ জবাবে তুষার শেখ লিখেন, ‘ক্যাম্পাসের বাইরে ভেতরে না মামা এদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই পিটাতে হবে।' এরপর আহসান হাবীব লিখেছেন, ‘যাচাই-বাছাই ছাড়াই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংগঠন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানিকর ও মিথ্যা পোস্ট অ্যাপ্রুভ করায় এদের বিরুদ্ধেও মামলা করা যাবে।’
আরেকটি স্ক্রিনশটে দেখা যায় কথোপকথনের বার্তাগুলো আনসেন্ট করা হয়েছে। তবে একটি বার্তায় তুষার শেখ লিখেছেন, ‘গায়ে হাত দেওয়া অন্যায় ঠিক। কিন্তু এদেরকে পিটানো ছাড়া কোনভাবেই সোজা করা সম্ভব নয়। এদেরকে পিটোনি দিলে সব ঠিক।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ক্রিনশটগুলো ঘটনার পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. তুষার শেখ বলেন, স্ক্রিনশটে কোথাও আমি সাধারণ শিক্ষার্থী লিখিনি। ওখানে বটবাহিনী বলতে যারা ফেসবুকে ছাত্রদল নিয়ে গুজব ও অপপ্রচার চালায় তাদের কথা বলেছি।
যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীবকে একাধিক বার কল দেয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ছাত্রদল কর্মী হাসিবুল ইসলাম হাসিব বলেন, আমি কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীকে পেটানোর কথা বলিনি। ফেসবুকে অনেক একাউন্ট আছে যেগুলোর প্রোফাইল পিকচারেরই ঠিক নেই। সেসব একাউন্ট থেকে প্রতিনিয়ত মিথ্যা পোস্ট ও কমেন্ট করে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি পেটানোর কথা বলেছিলাম।
এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। এমন হয়ে থাকলেও, সেই গ্রুপে সিনিয়র কোনো নেতৃবৃন্দ নেই। একটা কিছু বলা আর করা তো এক নয়। হয়তো ওরা কথার কথায় বলেছে। ছাত্রদলের কোনো নেতার এমন কিছু করার সুযোগ নেই।
অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, স্ক্রিনশটের বিষয়ে আমার জানা নেই। এটা আসলেই ছাত্রদলের কারো কি না, তা নিয়েও সন্দেহ থেকে যায়। এ বিষয়ে আমার খোঁজ নিতে হবে। কেন্দ্র থেকে আমানুল্লাহ আমান রাবি শাখার দায়িত্বে আছেন। উনার সাথে আলোচনা করে বিষয়য়ের সত্যতা জানার চেষ্টা করব। এর আগে কোনো মন্তব্য আমি করতে পারছি না।’
আবীর