ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৬ ফাল্গুন ১৪৩১

চিটাগাং চেম্বারে পাকিস্তানের হাইকমিশনার

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার প্রয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস

প্রকাশিত: ২২:২৫, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার প্রয়োজন

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা প্রয়োজন

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অংশ হিসেবে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা প্রয়োজন। এ জন্য বিজনেস টু বিজনেস সম্পর্কোন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য থাকলেও বিশাল যে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তা কমে আসবে। শুধু পাকিস্তান থেকে রপ্তানি বাড়ানোর কথা চিন্তা না করে বাংলাদেশ থেকেও কীভাবে রপ্তানি বাড়ানো যায় সে লক্ষ্যেও কাজ করা প্রয়োজন। 
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় কথাগুলো বলেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ। নগরীর আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা। পাকিস্তানি হাইকমিশনার এ বৈঠকে ওই দেশের একটি বাণিজ্যি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।

হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ বলেন, গত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষণীয়। এরই অংশ হিসেবে দু’দেশের মধ্যে সরাসরি নৌ-যোগাযোগ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে ঢাকা-ইসলামাবাদ সরাসরি ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ গ্রহণ এবং ব্যবসার নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের জন্য চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান।      
চিটাগং চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, বাংলাাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের ধর্মীয়, ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগত মিল রয়েছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক থাকলেও বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য পণ্য পাকিস্তানে রপ্তানি হয় না। 
পাকিস্তান বাংলাদেশের ১৯তম আমদানিকারক দেশ এবং পাকিস্তান থেকে প্রতি বছর প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি হয়। তাই উভয় দেশকেই বাণিজ্য বাধা বিশেষ করে নন-ট্যারিফ বাধা দূর করে সাফটা এবং ডি-৮ পিটিএ কার্যকর করার মাধ্যমে বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার আহ্বান জানান তিনি। চেম্বার প্রশাসক বলেন, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান কৃষিনির্ভর দেশ। তাই উভয় দেশের এই সেক্টরে উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিগত এবং নলেজ শেয়ারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। 
এ ছাড়া বক্তব্যে তিনি পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের এই সফরের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি ক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত বিনিময় ও যৌথ বিনিয়োগের আহ্বান জানান। 
মত বিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দূতাবাসের ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট অ্যাটাশে জাইন আজিজ, ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অথরিটি অব পাকিস্তানের সহকারী পরিচালক সারাং গুল, পাকিস্তানের রিশাদ মতিন গ্রুপের পরিচালক সাজিয়া মতিন, সল্ট হাউস পাকিস্তানের মোহাম্মদ শফিক, সাংগো এন্টারপ্রাইজের বাবর আমিন মালিক, আদিল ট্রেডার্সের মোহাম্মদ আদিল, রোশান গ্রুপের খালিদ ইজাজ কোরেশি, বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের মুহাম্মদ ফরহাদ উদ্দিন, অনুরা এন্টারপ্রাইজের মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম, মায়া এক্সপোর্টার অ্যান্ড ইমপোর্টারের মো. মশিউর রহমান সৈকত, রয়েল বিচ রিসোর্টের মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিন ও জামি এন্টারপ্রাইজের মো. সাইফুল ইসলাম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ ও ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।   
দূতাবাসের ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট অ্যাটাশে জাইন আজিজ বলেন, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে কোনো সমস্যা সমাধানে প্রস্তুত পাকিস্তানি দূতাবাস। আমদানির ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা উদ্ভূত হলে বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান তিনি। মত বিনিময় সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে রয়েছে পাকিস্তানি খেজুর ও মাল্টাসহ পাকিস্তানি ফলের চাহিদা। এসব ফল গুণগতমান বজায় রেখে রপ্তানির আহবান জানান ব্যবসায়ীরা। 
একই সঙ্গে পাকিস্তানের সাথে ধর্মীয় মিল থাকায় বাংলাদেশের পর্যটন স্পটগুলোতে পাকিস্তানিদের আমন্ত্রণ জানান তারা।

×