ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ মাঘ ১৪৩১

প্রতিদিন উৎপন্ন হয় সাড়ে তিন লাখ লিটার দুধ

শাহজাদপুরে বেদখল হয়ে যাচ্ছে বাথান ভূমি, বিপাকে খামারিরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:১৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

শাহজাদপুরে বেদখল হয়ে যাচ্ছে বাথান ভূমি, বিপাকে খামারিরা

দুধ দোহন করছেন খামারি

দেশের দুগ্ধশিল্পের কেন্দ্রবিন্দু ও নিউজিল্যান্ডখ্যাত জনপদ শাহজাদপুরের বাথানসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা (বাঘাবাড়ী মিল্কশেড এরিয়া) দিনে ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ লিটার গরুর দুধ উৎপন্ন হয়। প্রথমে এক ইংরেজ শাসক লর্ডলিন লিথদো ও পরে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে বিশাল ওই বাথানের গোড়াপত্তন হয়।
ওই বাথান ভূমিকে ঘিরেই দেশের মোট দুধের চাহিদার ৬০/৭০ ভাগ সরবরাহ করে এ অঞ্চলের খামারিরা। বাথান ভূমির সিংহভাগ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত, আর বাকি অংশ পাবনা ও নাটোর জেলার চলনবিল অংশে বিস্তৃত। আগে বাথান ভূমির আয়তন প্রায় ১৬শ’ একর জুড়ে বিস্তৃত থাকলেও নানা কারণে বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩ একরে! ১৯৮৩ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে পুরো ১৬শ’ থেকে ১৭শ’ একর জায়গা উদ্ধার করে মিল্ক ভিটার মাধ্যমে সমবায়ী দুগ্ধ খামারিদের ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষের সুপারিশ অনুসারে স্থানীয় ভূমি অফিস বিভিন্ন প্রাথমিক দুগ্ধ সমবায় সমিতির অনুকূলে বাথান ভূমি ইজারা দিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র  জানায়, বাথান ভূমির প্রায় ৫শ’ থেকে ৬শ’ একর জায়গা ভূমিদস্যুরা জাল দলিল, ভুয়া পত্তনি, বেদখল, অবৈধ উপায়ে নেয়া ইজারাসহ গাঁয়ের জোরে দখল করে নিয়েছে। স্থানীয় গো-খামারিরা প্রতিদিন ওই বিপুল পরিমাণ দুধ বাথান ও গোহাল (খামার) থেকে সংগ্রহ করে মিল্ক ভিটা কারখানা, প্রাণ, এমোমিল্ক, আফতাব, আড়ং, টাটকা, আকিজসহ বিভিন্ন বেসরকারি ডেইরি প্রজেক্টের কুলিং সেন্টারে সরবরাহ করে যা প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে।
খামারিরা জানায়, শাহজাদপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপাদিত হয় পোতাজিয়ার জনবিচ্ছিন্ন বিস্তীর্ণ বাথানসহ আশপাশের ছোট-বড় অসংখ্য বাথান ও গো-খামারে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এসব এলাকায় সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপন্ন হয়। প্রতিদিন সকার বিকেল দু’বেলায় হাজার হাজার ক্যানে ভ্যান ও ট্রলিযোগে দুধ পৌঁছে দেওয়া হয় বাঘাবাড়ীর মিল্ক ভিটা কারখানাসহ নানা দুধ সংগ্রহ প্রতিষ্ঠানে।
স্থানীয় গো-খামারি খলিল মোল্লা বলেন, তার ৫০টি দুধেল গাভী রয়েছে।
মিল্ক ভিটায় তিনি দুধ সরবরাহ করছেন। ৪-৫ জন রাখাল নিয়িমিত গাভীগুলো পরিচর্যা করছে। তবে বর্তমানে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় খরচের তুলনায় দুধের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না।
মিল্ক ভিটার সাবেক পরিচালক বাবুল আক্তার জানান, শাহজাদপুরের বাথান ভূমি দেশের সবচেয়ে বড় গো-চারণভূমি। এখানকার খামারিরা সরকারকে বার্ষিক খাজনা প্রদানের মাধ্যমে বাথান ল্যান্ডের জমি ভোগ করে। মিল্ক ভিটা কর্তৃপক্ষ  প্রাথমিক দুগ্ধ সমবায় সমিতিগুলোর দুধ উৎপাদনের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে বাথানল্যান্ডের জমি লিজের জন্য শর্ত সাপেক্ষে সুপারিশ করে।

×